দেশের ‘মন্দিরনগরী’র তালিকায় ঢুকবে আনন্দনগরীর নাম! ভুবনেশ্বর, মাদুরাই, জম্মু, হরিদ্বারের সঙ্গে এক সারিতে থাকবে কলকাতাও। আসন্ন শারদোৎসবে।
তার প্রস্তুতিতে শহরের অলিগলিতে গড়ে উঠছে একের পর এক মন্দির। পুরী, বৃন্দাবন, কাঠমাণ্ডু, রুদ্রপ্রয়াগের কয়েকটি মন্দিরের আদল থাকবে মহানগরীর দুর্গামণ্ডপে। কোথাও মণ্ডপ-শৈলীতে মিশবে কল্পনা।
কোথাও মাতৃ-মন্দির গড়বে হাজার-হাজার পিঁপড়ে, কীট-পতঙ্গ, পাখি!
পাতিপুকুরের বসাকবাগান অধিবাসীবৃন্দের মণ্ডপে ঘটছে এমনই কাণ্ড। ঝুড়ির আকারের মন্দির তৈরিতে জুটেছে ৫০-৬০ হাজার পিঁপড়ে। সঙ্গে হরেক কীট-পতঙ্গ, রঙিন পাখি। ঝুড়ির আশপাশে কাঠের গুঁড়ো, কাগজের মণ্ড দিয়ে গড়া হচ্ছে গাছ, মাছ। মণ্ডপের কাজে ব্যস্ত আর্ট কলেজের ছাত্ররা।
গড়িয়াহাটের মোড়ের কাছেই সিংহি পার্ক সর্বজনীনের মণ্ডপ। সাবেকি প্রতিমা থাকবেন হিন্দু, মুসলিম এবং ইউরোপের স্থাপত্যের অনুকরণে তৈরি বৃন্দাবনের গোবিন্দজি মন্দিরে। মনে হবে, লাল বালিপাথরের তৈরি হয়েছে সেই মণ্ডপ। চন্দননগরের আলোয় থাকবে মা দুগ্গার পরিবারের বাহনরা। মানিকতলার লালাবাগান নবাঙ্কুর-এ দুর্গাদর্শনে ঢুকতে হবে কাল্পনিক গুহামন্দিরে। শ’তিনেক পাথর খোদাই মুর্তি থাকবে সেই মণ্ডপে। ১৫ ফুটের প্রতিমাও মায়াবী। সবকিছুই হবে কল্পনার জগতের মতো।
জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার রথে চেপে একবালপুরের ময়ূরভঞ্জ দুর্গোৎসব সমিতির দেবী-দর্শন করবেন পুজোপ্রেমীরা। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কারুকাজ থাকবে প্রাক-রজত জয়ন্তী বর্ষে পা দেওয়া সেই মণ্ডপে। বাগুইআটির রবীন্দ্রপল্লির সুভাষ সঙ্ঘ গড়ছে নেপালের কাঠমাণ্ডুর পশুপতিনাথ মন্দির। মণ্ডপের সাজে দর্শনার্থীদের মন জিততে চান ওই সঙ্ঘের সকলেই।
বেলেঘাটার অবিনাশচন্দ্র ব্যানার্জি লেনের প্রগতি সংসদে দক্ষিণ ভারতের এক মন্দির। নতুনত্ব থাকবে প্রতিমার সাজেও। কর্নাটকের সাঁইবাবার মন্দির তৈরি করছে ডায়মণ্ড হারবার রোডের বড়িশা নবীন সঙ্ঘ। আলোর কাজেও থাকবে কারিকুরি। লেকটাউনের লিঙ্ক রোডের অধিবাসীবৃন্দ দুর্গাপূজা কমিটির মণ্ডপ রুদ্রপ্রয়াগের তুঙ্গনাথ মন্দিরের আদলে তৈরি। পাহাড়ঘেরা মণ্ডপের আশপাশে থাকবে পঞ্চকেদারের অন্য মন্দিরের প্রতীক। মূল-মন্দিরের সামনে বাহন নন্দীকে নিয়ে বিরাজমান থাকবেন মহাদেব। নন্দীবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির ‘দেবাঙ্গন’-এ দেশের নানা প্রান্তের স্থাপত্যের ছোঁয়া।
পুজোর চার দিন শহরজুড়ে মন্দিরের ভিড়ে ‘অঞ্জলি’ নিয়ে পৌঁছবে কলকাতা।
|