হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-এর শেয়ার নিলাম প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা সংস্থা ডেলয়েটকে এ বার সরকারি অবস্থান স্পষ্ট করে দিল দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রিগোষ্ঠী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, এই পরিপ্রেক্ষিতে নিলামে আগ্রহী সংস্থাগুলিকে শেয়ার ক্রয় সংক্রান্ত সংশোধিত চুক্তিপত্র দ্রুত দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য।
বুধবার রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের দফতরে ডেলয়েট-এর সঙ্গে বৈঠক করেন বিশেষ মন্ত্রিগোষ্ঠীর চার সদস্য: শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। নিলাম প্রক্রিয়া দেখাশোনা করতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তৈরি করে দিয়েছেন এই মন্ত্রিগোষ্ঠী।
এর আগে গত শনিবার ডেলয়েটের সঙ্গে প্রাক-নিলাম বৈঠকে বসেছিল পেট্রোকেমের শেয়ার হাতে নিতে আগ্রহী সংস্থাগুলি। তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেইল, ইন্ডিয়ান অয়েল এবং ওএনজিসি ছাড়াও দৌড়ে রয়েছে মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স ও কেয়ার্ন ইন্ডিয়া। নিলামে সামিল হওয়ার আগে চুক্তিপত্র নিয়ে ৪টি প্রশ্ন তোলেন সংস্থাগুলির প্রতিনিধিরা। এগুলি হল:
(১) চলতি অর্থবর্ষে সংস্থার বিপুল লোকসানের কতটা দায় নয়া অংশীদারের উপর বর্তাবে।
(২) অংশীদারি হাতে আসার আগে মাঝের সময়টুকুতে পরিচালন পর্ষদে নতুন সংস্থার প্রতিনিধি থাকবেন কি না।
(৩) চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর দাবি, রাজ্য যে ৬৭.৫০ কোটি শেয়ার বিক্রি করতে চাইছে, তার মধ্যে ১৫.৫০ কোটি আসলে তাদেরই। সে সম্পর্কে সরকারের বক্তব্য কী।
(৪) শেয়ার কেনার পাঁচ বছরের মধ্যে তা ফের বিক্রি না-করার শর্তটির কী হবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে:
(১) লোকসানের বোঝা নিয়ে রাজ্য মাথা ঘামাতে রাজি নয়। কারণ সংস্থার আর্থিক হাল খতিয়ে দেখেই শেয়ার কিনতে এগিয়েছে আগ্রহী সংস্থা।
(২) মাঝের সময়ে পরিচালন পর্ষদে নতুন সংস্থার প্রতিনিধি থাকার আর্জি মেনে নিয়েছে রাজ্য।
(৩) বিতর্কিত ১৫.৫০ কোটি শেয়ার নিয়ে মামলা চলছে বলে এ বিষয়ে রাজ্য কোনও উত্তর দিতে নারাজ।
(৪) শেয়ার কেনার ৫ বছরের মধ্যে তা বিক্রি না-করার শর্ত অপরিবর্তিত রাখতে চায় রাজ্য। এ ছাড়াও ‘আর্নেস্ট মানি’ বা বায়নার টাকার একটি অংশ রেখে বাকি টাকা রাজ্য সরকার ফিরিয়ে দেবে।
এ দিন বৈঠক শেষে পার্থবাবু জানান, নিলাম প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্ধারিত সময়সূচির বিশেষ হেরফের হবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, মন্ত্রিগোষ্ঠীর মত জানার পরে দু’সপ্তাহ বাড়তি সময় চেয়েছিল ডেলয়েট। রাজ্য এক সপ্তাহের বেশি দিতে রাজি নয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বর ছিল আর্থিক দরপত্র দেওয়ার সময়সীমা। প্রথমে শেয়ার কিনতে ইচ্ছাপত্র জমার সময়সীমা ছিল ১০ জুন। দাম জানানোর সময়সীমা ঠিক হয় ৩১ অগস্ট।
মে মাসে পেট্রোকেমে নিজের শেয়ার বিক্রি করতে বিজ্ঞাপন দেয় রাজ্য। প্রথমে শেয়ার কিনতে ইচ্ছাপত্র জমার সময়সীমা ছিল ১০ জুন। দাম জানানোর দিন ঠিক হয় ৩১ অগস্ট। গত মাসের শেষে ডেলয়েটের সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যরা জানান, শেয়ার নিলাম শেষ হবে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই।
|