চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়া (সিএনআই)-র তদন্ত কমিটি এসেছিল সোমবার। মঙ্গলবার ফের ভাঙাচোরা স্কুল পরিদর্শন করলেন তাদের প্রতিনিধিরা। কিন্তু দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ গার্লস স্কুল কবে ফের খোলা হবে, তার দিনক্ষণ এ দিনও জানাতে পারলেন না তাঁরা। স্কুল দেখে ফেরার সময় সিএনআইয়ের কলকাতা ডায়োসেস-এর সাম্মানিক সচিব আবির অধিকারী বলেন, “স্কুল খোলার দিন এখনও ঠিক হয়নি।”
এ দিন স্কুলে কী দেখলেন তাঁরা?
আবিরবাবু বলেন, “স্কুলের বহু মূল্যবান সামগ্রীই খোয়া গিয়েছে। অনেকের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশন ফর্মও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।” মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, তাণ্ডবে নষ্ট হয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ নথি পেতে ছাত্রীদের যাতে সমস্যা না-হয়, তা দেখা হবে।
আবিরবাবুরা পরিদর্শনে যাওয়ার আগে, বেলা পৌনে ২টো নাগাদ ভাঙচুর সংক্রান্ত তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করতে স্কুলে যায় দুই সদস্যের ফরেন্সিক দল। তারা স্কুলের ২০টি শৌচাগারের দরজাও পরীক্ষা করে। বেশ কয়েকটি শৌচাগারের বাইরের ছিটকিনি ভাঙা। তবে অনেক শৌচাগারেই বাইরে ছিটকিনি রয়েছে বলে ফরেন্সিক প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, ভাঙচুরের তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শীঘ্রই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
এর আগে, বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশের একটি দল যায় পঞ্চম শ্রেণির মৃত ছাত্রী ঐন্দ্রিলা দাসের বাগুইআটির বাড়িতে। ৪৫ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন ঐন্দ্রিলার বাবা, মা, দাদু, ঐন্দ্রিলার গৃহশিক্ষিকা এবং পাড়ারই এক ছাত্রীকে (যার সঙ্গে ঐন্দ্রিলা স্কুলে যেত)। জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব ভিডিওয় তুলে রাখা হয়েছে।
ঐন্দ্রিলার দাদু নিরঞ্জন দাস এ দিনই নাতনির মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়ে মানবাধিকার কমিশনকে একটি চিঠি দিয়েছেন। সোমবার ঐন্দ্রিলার পিসি সুস্মিতা মণ্ডল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এ দিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “ওঁরা আমার কাছে স্কুল খোলার ব্যাপারে কথা বলতে এসেছিলেন। কিন্তু বেসরকারি স্কুল খোলার ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারি না। তাই ওঁদের লিখিত ভাবে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে বলেছি।”
বৃহস্পতিবার ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলে ঠিক কী ঘটেছিল, সেই বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্কুল পরিদর্শকের রিপোর্ট সোমবারেই স্কুলশিক্ষা দফতরে জমা পড়েছে বলে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর। দফতরের এক আধিকারিক জানান, ভাঙচুরের সময় উত্তেজনার পরিবেশে যে অনেক কাজই করা যায়নি, রিপোর্টে তা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, তাণ্ডবের মধ্যে স্কুল পরিদর্শন করা যায়নি। কার্যত প্রাণ বাঁচিয়ে রাত প্রায় সাড়ে ৯টায় পরিদর্শক ওই দিন স্কুল থেকে বেরিয়ে আসেন।
|