নৌ-ঘাঁটি হানায় হত ভারতীয় বংশোদ্ভূত
ন্দুকবাজের এলোপাথাড়ি গুলি প্রাণ কেড়ে নিল বিষ্ণু পণ্ডিতের। সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কিন নৌসেনার দফতরে বন্দুকবাজের যে হামলা হয়েছিল, তাতে নিহত হন বারো জন। ওয়াশিংটন পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিষ্ণু পণ্ডিতও। আগে ধন্দ থাকলেও ওয়াশিংটন পুলিশ নিশ্চিত, দু’জন নয়, এক জনই হামলা চালিয়েছে। কিন্তু সেই অভিযুক্ত অ্যারন নৌসেনা দফতরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যাওয়ায় হামলার কারণ নিয়ে ধন্দ কাটেনি।
ঘাতক অ্যারন
ওয়াশিংটন পুলিশ জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরে ঠিকাদার হিসেবে কাজ করতেন ৬১ বছরের বিষ্ণু। গত ২০ বছর স্ত্রীকে নিয়ে নর্থ পোটোম্যাক এলাকায় বসবাস করছিলেন তিনি। ‘ভাল মানুষ’ হিসেবে প্রতিবেশীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়ও ছিলেন বিষ্ণু। তাঁর এই রকম মৃত্যু কিছুতেই মানতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। ঠিক যেমন ভাবে গত কালের এই হামলায় অ্যারনই যে দায়ী, তা মানতে নারাজ নুতপিসিত সুথামতেওয়াকুল। শেষের দিকে নুতপিসিতের তাই রেস্তোরাঁতেই কাজ করতেন অ্যারোন। ওয়াশিংটনে আসার আগে টেক্সাসের ফোর্ট ওয়ার্থ এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন অ্যারন। সেখানে তাঁর ‘রুমমেট’ ছিলেন এই নুতপিসিত। খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন অ্যারনকে। তাঁর মন্তব্য, “ওর একটা বন্দুক ছিল বটে। কিন্তু মনে হয় না ও এতটা বোকা।”
তবে পুলিশের তথ্য বলছে, এর আগেও দু’বার আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন অ্যারন। ২০০৪ সালে রাগের মাথায় এক নির্মাণকর্মীর গাড়ির টায়ার লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযাগে গ্রেফতার হন তিনি। কিন্তু পুলিশের কাছে জানান, পুরোটাই করেছেন ‘অ্যাঙ্গার ব্ল্যাকআউটের’ জেরে। অর্থাৎ গুলিচালনা কিংবা ওই কর্মীর সঙ্গে বাদানুবাদ, সব কিছুই করেছিলেন অচেতন ভাবে। অ্যারনের বাবার দাবি, ৯/১১ কাণ্ডের সময়ে উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছিলেন তাঁর ছেলে। চার দিকে ধ্বংসের পরিবেশ দেখে ‘পোস্ট ট্রম্যাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে’ আক্রান্ত হন তিনি। আর তার পর থেকেই রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন না। এর পরের ঘটনাটি ঘটে ২০১০ সালে। ফোর্ট ওয়ার্থের যে ফ্ল্যাটে ছিলেন অ্যারন, তার ঠিক ওপরের ফ্ল্যাটের মহিলা অভিযোগ আনেন, মতবিরোধের জেরে গুলি চালিয়ে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন অ্যারন। কিন্তু এ বারেও প্রমাণ না মেলায় ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। সম্প্রতি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে তিনি মনোবিদের সাহায্য নেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন বলে খবর।
ওয়াশিংটন প্রশাসনের প্রশ্ন, মানসিক ভাবে অসুস্থ এবং আইনি ঝামেলায় জড়িত অ্যারন কী ভাবে মার্কিন রাজধানীর অদূরে নৌসেনার দফতরে ঢোকার ছাড়পত্র পেলেন? নৌসেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০০৭ থেকে ২০১১-এর জানুয়ারি পর্যন্ত নৌসেনার ‘অ্যাভিয়েশন ইলেকট্রিশিয়ান’ ছিলেন অ্যারন। কিন্তু সেখানেও একাধিক বার দুর্ব্যবহারের অভিযোগ ওঠায় নৌসেনা থেকে বের করে দেওয়া হয় তাঁকে। সম্প্রতি ঠিকাদার হিসেবে নৌসেনার সঙ্গে ফের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। সেই সূত্রে দফতরের বৈধ প্রবেশপত্রও ছিল তাঁর কাছে।
সোমবারও সেই প্রবেশপত্র দেখিয়েই দফতরে ঢুকেছিলেন তিনি। তার পরের ঘটনায় এখনও আতঙ্কিত দফতরের কর্মীরা। গত কাল দফতর পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার পর দিনের শেষে আংশিক ভাবে খোলা হয়। এ দিনও আপৎকালীন কর্মীরা ছাড়া বাকিদের আসতে বারণ করা হয় দফতরে। কড়া নিরাপত্তার চাদরে তদন্ত চলছে। শুধু সমাধান মিলছে না একটা ধাঁধাঁর। সম্প্রতি বৌদ্ধধর্ম নিয়েছিলেন অ্যারন। নিয়মিত প্রার্থনা করতেন, শান্তি খুঁজতে যেতেন বৌদ্ধমন্দিরেও। সেই শান্তির খোঁজে হঠাৎ কী ভাবে বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন তিনি, ধন্দে সবাই।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.