রাজ্যে পট পরিবর্তনের পরে তিন বছরে খুন হয়েছেন পরপর তিন জন। প্রথম জনের ঘটনায় এক জন গ্রেফতার হয়। সে এখন ছাড়া পেয়ে নিহতের বাড়ির লোককে হুমকি দিচ্ছে! বাকি দু’জনের হত্যাকাণ্ডে কেউ গ্রেফতারই হয়নি! বর্ধমানের নিহত ওই তিন সিপিএম নেতার পরিজনেরা বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে শেষ পর্যন্ত দ্বারস্থ হলেন রাজ্যপালের। রাজভবনে মঙ্গলবার তাঁদের সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র।
আসানসোল শিল্পাঞ্চলেই ২০১১, ’১২ ও ’১৩ সালে যথাক্রমে খুন হয়েছেন তিন সিপিএম নেতা নির্গুণ দুবে, অর্পণ মুখোপাধ্যায় ও দিলীপ সরকার। নির্গুণ খুন হয়েছিলেন দলীয় কার্যালয় থেকে রাতে বাড়ি ফেরার পথে। অন্য দু’জন সকালে। রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে গিয়ে নির্গুণের স্ত্রী ললিতা দেবী এ দিন অভিযোগ করেন, খুনের মামলা প্রত্যাহার না-করলে তাঁদেরও একই পরিণতি হবে বলে এখন হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে অপরাধীরা। |
মেয়ের বিয়ের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু মেয়েকেও শাসাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। নির্গুণের ছেলে অভীককুমার দুবের কথায়, “রাজনৈতিক দল দেখে আমরা কিছু বলছি না। কিন্তু পুলিশ নামমাত্র তদন্ত করে ফাইল বন্ধ করে দিয়েছে!” নিহত প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপবাবুর স্ত্রী শেফালী সরকারের বক্তব্য, “কেন আমার স্বামী খুন হয়েছেন, ঘটনার পর থেকেই তা নিয়ে সর্বৈব মিথ্যা প্রচার চলছে। কোনও খুনি আজ পর্যন্ত ধরা পড়েনি। রাজ্যপালের কাছে সুবিচার চেয়েছি।” মা ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়কে পাশে নিয়ে অর্পণবাবুর ছেলে অর্কদেবের দাবি, “গত বছর ৩১ অগস্ট বাবার খুনের মামলা হাতে নিয়েছিল সিআইডি। এক বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে। এক জনও গ্রেফতার হয়নি। আমরা বিচার চাই।”
পরিজনদের বিচারের দাবি সামনে রেখেই সূর্যবাবু বলেছেন, ঘটনাগুলির পিছনে কখনও নারী পাচার চক্র, কখনও কয়লা মাফিয়া, কখনও সিপিএমের অন্তর্দ্বন্দ্বের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কোনওটাও যদি সত্য হয়, কেউ ধরা পড়বে না কেন? তাঁর অভিযোগ, “আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট হওয়ার পরে ৩০টা খুন হয়েছে। খোলামুখ খনি, ডিভিসি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওয়াগন লুঠ বা ইস্কোর স্ক্র্যাপ কারা পাবে, সব বাঁটোয়ারা হচ্ছে। শাসক দলের নেতারা এর সঙ্গে জড়িত।” |