ভোর হতেই অন্ডাল স্টেশন ছেড়ে হেলেদুলে রামপুরহাটের দিকে রওনা দেয় প্রায় ফাঁকা ট্রেনটি। আর তার কিছু পরেই হুড়মুড়িয়ে এসে পরে আরও দুটো ট্রেন। যাদের আবার বীরভূম যাওয়ার জন্য বসে থাকতে হয় ঠায় দু’ঘণ্টা। নিত্যযাত্রীদের দাবি, ভোরের অন্ডাল-রামপুরহাট ভায়া সাঁইথিয়া লোকাল ট্রেনটি ছাড়ার সময় যদি আধ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে অনেকে ট্রেন ধরতে পারেন। পাশাপাশি রেলের ঘরে অতিরিক্ত রাজস্বও ঢুকবে।
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর ৫টায় অন্ডাল-রামপুরহাট ভায়া সাঁইথিয়া লোকালটি অন্ডাল থেকে ছাড়ে। আবার সাড়ে ৯টায় রামপুরহাট থেকে ছেড়ে অন্ডাল ঢোকে ১১টা নাগাদ। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, সকালে অধিকাংশ দিনই ফাঁকা থাকে ট্রেনটি। কারণ অত সকালে অন্ডাল থেকে বীরভূমগামী খুব বেশি যাত্রী থাকেন না। অথচ এর পরেই আসানসোল থেকে বর্ধমানগামী লোকাল অন্ডাল পৌঁছয় ৫টা ২১ মিনিটে এবং বর্ধমান থেকে আসানসোলগামী লোকাল অন্ডালে পৌঁছয় ৫টা ২৬ মিনিটে। এই দুই ট্রেনেই বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় যেতে চান এমন অনেক যাত্রী থাকেন। কিন্তু রামপুরহাট যাওয়ার পরের ট্রেন সকাল ৮টায়। ফলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা স্টেশনে অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের। গন্তব্যে পৌঁছতেও দেরি হয়ে যায়। অথচ প্রথম ট্রেনটি রোজই যাত্রীর অভাবে প্রায় ফাঁকা যায় বলে তাঁদের অভিযোগ।
রেলযাত্রী অনিকেত বসু, শর্মিষ্ঠা রায়, শ্যাম বন্দ্যোপাধ্যায়দের দাবি, “বর্ধমান থেকে আসি। কর্মস্থল সাঁইথিয়া। বাড়ি থেকে ভোরে বেরিয়েও বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় ট্রেনটি ধরে যাতায়াত করি। অফিস পৌঁছাতে দেরি হয়ে যায়। প্রথম ট্রেনটি আধঘন্টা পিছিয়ে দিলে পেয়ে যেতাম।” আসানসোল থেকে আসা সমর দাস, অনিক দত্ত, সমরেশ বক্সিরাও বলেন, “প্রথম ট্রেনটি ছাড়ার মিনিট কুড়ি পরে আমরা অন্ডাল ঢুকি। পরের ট্রেনটি ধরার জন্য প্রায় আড়াই ঘন্টা বসে থাকতে হয়।” রানিগঞ্জের এক রেলকর্মী নিলাদ্রী সেন জানান, তাঁর বাড়ি বহরমপুরে। ট্রেন না থাকায় একদিনের ছুটিতে বাড়ি যেতে পারেন না তিনি। কারণ দ্বিতীয় ট্রেন ধরে বাড়ি পৌঁছতে দুপুর গড়িয়ে যায়। ফলে পরের দিন কাজে যোগ দিতে সমস্যা হয়। যাত্রীদের এক অংশ জানান, ট্রেনের সময় পিছনো হলে শুধু আমাদের নয়, রেলেরও উপকার হবে। যাত্রী বাড়লে টিকিট বিক্রি বাবদ বাড়তি রাজস্বও ঢুকবে রেলের ভাঁড়ারে। বিষয়টি জানিয়ে তাঁরা ডিআরএম দফতরে চিঠিও পাঠিয়েছেন নিত্যযাত্রীরা।
তবে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিআরএম দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনও রুটে আগে-পরের ট্রেনের সময়সূচী, লাইন ফাঁকা পাওয়া যাবে কিনা, সেই লাইনে এক্সপ্রেস ট্রেনের সংখ্যা ইত্যাদি বিচার করে লোকাল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনের সময়সূচী তৈরি করা হয়। সেভাবেই অন্ডাল-রামপুরহাট ভায়া সাঁইথিয়া লোকাল ট্রেনের সময়সূচীও তৈরি হয়েছে। তবে যাত্রীদের দাবি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ডিআরএম দফতরের এক আধিকারিক। |