বারাসতের কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পরে তাঁর পরিবার রাজ্য সরকারের চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল। সেই ঘটনার প্রায় তিন মাস পরে, গত শুক্রবার মৃত্যু হয় ওই মামলার প্রধান সাক্ষী এবং নিহত ছাত্রীর কাকা বিমলচন্দ্র ঘোষের। এ বার অবশ্য আর্থিক অনটনের কারণেই সরকারের দেওয়া চাকরি নিতে চলেছে বিমলবাবুর পরিবার। ওই পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পরে সোমবার এ কথা জানান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বিমলবাবুর স্ত্রী বাসন্তীদেবী সেই চাকরি নেবেন বলেই প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।
৭ জুন পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কামদুনির ওই কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। তার কিছু আগেই বাসস্ট্যান্ডে ওই ছাত্রীর সঙ্গে শেষ দেখা হয় তাঁর কাকা বিমলবাবুর। তিনি ভাইঝিকে বলেন, “সাবধানে যাস।” ভাইঝির মৃতদেহ সবার আগে দেখতে পান বিমলবাবুই। ওই মামলার প্রধান সাক্ষী বিমলবাবু এবং তাঁর সঙ্গীরা দোষীদের চরম শাস্তি চেয়ে ১০ সেপ্টেম্বর কলকাতা নগর দায়রা আদালতে বিক্ষোভ দেখানোর সময় পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিমলবাবু। তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁর চিকিৎসায় গাফিলতি দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। কামদুনিবাসী হাসপাতালে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান।
সংসারে একমাত্র রোজগেরে বিমলবাবুর মৃত্যুতে স্ত্রী বাসন্তীদেবী-সহ গোটা পরিবার অথৈ জলে পড়ে যান। জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “সেই জন্যই বিমলবাবুর পরিবারকে সাহায্য করার কথা ভাবা হয়েছে।” এ দিন মধ্যমগ্রামে উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূলের কার্যালয়ে বাসন্তীদেবী এবং বিমলবাবুর অন্য আত্মীয়স্বজন খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। মন্ত্রীর কথামতো চাকরির আবেদন করেন বাসন্তীদেবী। পরে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “রাজ্য কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন ব্যাঙ্কের বারাসত শাখায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে বাসন্তীদেবীর কাজের ব্যবস্থা হয়েছে। বাসন্তীদেবী নিজে এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। তবে নিহত ছাত্রীর দাদা বলেন, “কাকিমার এই কাজটার খুব প্রয়োজন ছিল।” |