জঙ্গলে পাহাড়ি নদীতে ভ্রমণ ঘুরিয়ে দেখাবে স্বনির্ভর মাঝিরা
পুজোর মরসুমে পর্যটক টানতে নৌকায় নদী ভ্রমণের ব্যবস্থা করছেন গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া ময়নাগুড়ির রামসাই এলাকার এক দল মাঝি। জঙ্গলের বাইরে হলেও নৌকা থেকে নদীবক্ষে জেগে ওঠা চরের ঘাস জঙ্গলে দেখা মিলছে বাইসন, ময়ূর ও হরিণ। শুধু জলপথে ভ্রমণ নয়। নদীয়ালি মাছের ঝোল দিয়ে দুপুরে পাত পেড়ে খাবার ব্যবস্থা আছে।
মাঝিদের এ হেন উদ্যোগের কথা শুনে জেলা প্রশাসন কর্তা থেকে পর্যটন সংস্থার কর্মী প্রত্যেকে খুশি। এ বিষয়ে ময়নাগুড়ির যুগ্ম বিডিও সমরেশ রায় বলেন, “খুব ভাল উদ্যোগ। মাঝিরা যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।” তবে শুরুতে সাহায্যের জন্য হাত পাততে নারাজ মাঝিদের কেউ।
কদমবাড়ি
থেকে জল পথে।
গরুমারায় ভেঙে পড়ে থাকা গাছ সরিয়ে
রাস্তা পরিষ্কার করে নিচ্ছেন পযর্টকেরা।
তাঁদের কথায়, “নিজেদের চেষ্টায় কতটা এগোই সেটা আগে দেখি।” গ্রামের লোকজনের স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার এমন চেষ্টা শুনে ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুভাষ বসু বলেন, “আমরা মাঝিদের পাশে সব সময় আছি।” পর্যটকদের নিয়ে মাঝিরা তিনটি পাহাড়ি নদীতে ভাসবেন—জলঢাকা, মূর্তি ও ডায়না। নৌকা বিহারের জন্য পর্যটকদের রাইনো ক্যাম্প থেকে সড়ক পথে পানবাড়ির চোপড়ামারি গ্রামে পৌঁছে এগিয়ে যেতে হবে জলঢাকা নদী বাঁধের দিকে। সেখানে বাঁশ বাগানের ছায়ায় মাঝিরা তৈরি করেছেন ‘পার্কিং জোন’। এর পর মোষের গাড়িতে প্রায় দু’কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে নদী ঘাট। মাঝিদের চায়ের স্টল। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রধান পরিমল মণ্ডল জানান, প্রতিটি নৌকা ছয়জন পর্যটককে নিয়ে কদমবাড়ি থেকে যাবে কামারঘাটে। পরে সেখান থেকে ডোববাড়ি হয়ে ধূপগুড়ির গধেয়াকুঠি এলাকার জঙ্গল ছুঁয়ে ফিরে আসবে কদমবাড়ি ঘাটে। ৩ ঘণ্টার ভ্রমণে নৌকা যত এগোবে পাল্টে যাবে জলের রং। প্রকৃতির ওই খেলায় মেতে পর্যটক জেনে নেবেন নদীর নাম।

প্রথম দিনেই গরুমারায় নুনিয়ার কাছে গন্ডারেরা।
পরিমলবাবু বলেন, “পরীক্ষা মূলক ভ্রমণে সাড়া মিলেছে। নৌকা বিহার ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে যাবে।” মাঝ নদীতে মিলবে অন্য এক জগৎ। বরাত ভাল থাকলে নদীবক্ষে জেগে থাকা চরের সবুজ ঘাস জঙ্গলে দেখা যাবে বাইসনের দল। এ ছাড়াও তো রয়েছে রকমারি পাখি। স্বনির্ভর গোষ্ঠী সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল-বিকাল ভ্রমণ ব্যবস্থা থাকবে। সকালে যাঁরা আসবেন তাঁরা নদী পাড়ে বসে কলাপাতায় নদীর মাছের ঝোল দিয়ে ‘লাঞ্চ’ সেরে নিতে পারেন। মাথা পিছু ২০০ টাকা। পর্যটন কর্মী মানিক দে সরকার বলেন, “২০০৭-এ গরুর গাড়িতে ভ্রমণ চালুর পর পর্যটকদের ভিড় বাড়ে। ৭৫ পরিবার ঘুরে দাঁড়ায়। নৌকা ভ্রমণ চালু হলে ভিড় বাড়বে। অন্তত ৫০টি পরিবার উপকৃত হবে।”
ভ্রমণের জন্য রামসাই রাইনো ক্যাম্প থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে কদমবাড়ি এলাকায় তিনটি
নদীর সঙ্গমস্থল বেছে নিয়েছেন তাঁরা। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নামকরণ করেছেন ‘জলঢাকা-মূর্তি-ডায়না
স্বনির্ভর গোষ্ঠী’। ছয়টি নৌকা, ছয় জন মাঝি, সহযোগী আরও ছয় জনএই নিয়ে দল। মাঝি
ফুলেন রায়, জুরান রায়, মদন রায় জানান, সহযোগীরা গাইডের কাজ করবেন।

সোমবার ছবিগুলি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.