মেলার মাঠেই ভর্তুকির টাকা পেল ২২ সংস্থা
শিল্প মেলার মাঠ থেকেই বিদ্যুৎ ভর্তুকি বাবদ ২৪টি শিল্প সংস্থা পেয়ে গেল মোট ৮ কোটি টাকা। তা-ও আবার এক দিনে!
মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, মেলার মাঠে কথা না বলে কাজে করে দেখাতে হবে। সোমবার ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসারে ‘সিনার্জি-এমএসএমই-২০১৩’ মেলায় সেই পেশাদারিত্বই দেখাল রাজ্যের অর্থ দফতর। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানিয়েছেন, মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী দু’টি সংস্থার হাতে বিদ্যুৎ ভর্তুকি বাবদ তাদের পাওনা টাকা দিয়েছিলেন। উদ্বোধন শেষে বাকি ২২টি সংস্থা মেলার মাঠেই অর্থ দফতরের স্টলে এসে সঠিক প্রমাণপত্র জমা দিতেই তাদের হাতেও চেক তুলে দেওয়া হয়েছে।
পেশাদারিত্বের দৌড়ে পিছিয়ে নেই এই মেলার মূল উদ্যোক্তা রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরও। সাধারণত এই ধরনের সরকারি মেলায় যে ধরনের ফাঁক-ফোকর দেখা যায়, তার অনেকটাই ভরাট করার চেষ্টা হয়েছে।
সিনার্জি-এমএসএমই-২০১৩ মেলা ঘুরে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: সুদীপ আচার্য।
প্রথম দিনেই সব স্টল প্রস্তুত। উদ্বোধনের দিনে মাঠে কোথাও মিস্ত্রিদের কাজ করতে দেখা যায়নি, যা এক কথায় প্রায় দেখাই যায় না। এমনকী মিলন মেলার মাঠে বেঙ্গল লিডস-এর মতো বড় শিল্প সম্মেলনেও প্রথম বার এই ছবি চোখে পড়েনি। প্রায় একই ছবি দেখা গিয়েছিল হলদিয়ায় বেঙ্গল লিডস-এর দ্বিতীয় শিল্প সভাতেও। সেই অগোছালো ছবি কিন্তু সোমবার চোখে পড়েনি ক্ষুদ্র শিল্প সম্মেলনে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের সচিব রাজীব সিংহ এ দিন জানি দিয়েছেন, সরকারি টাকায় খাওয়া-দাওয়া, সঙ্গীতানুষ্ঠান এ সবের কোনও আয়োজন নেই এই মেলায়। যতখানি সম্ভব পেশাদারী দক্ষতায় ক্ষুদ্র শিল্প সংস্থাগুলির জন্য প্রযুক্তি থেকে ব্যবসায়িক পরামর্শ, কর সংক্রান্ত সব রকম সহযোগিতা পাওয়ার ব্যবস্থা রাখা রয়েছে এখানে। কোনও সংস্থা সুযোগের সদ্বব্যবহার করতে চাইলে মেলার মাঠ থেকেই কোনও ছোট প্রকল্পের অনুমোদন পেয়ে যেতে পারেন বলেও দাবি তাঁর। মেলায় ঘুরতে গিয়ে দেখা গেল, ইউবিআই, স্টেট ব্যাঙ্কের মতো বিভিন্ন সরকারি ব্যাঙ্কের পাশাপাশিই রয়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কের স্টলও। জায়গা দেওয়া হয়েছে বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকেও। ক্ষুদ্র শিল্প সংস্থাগুলিকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য হাজির হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের পরামর্শদাতা সংস্থা কেপিএমজি-ও।
ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি যে তাঁবুতে রয়েছে, তার পাশেই অন্য একটি তাঁবুতে আনা হয়েছে বিভিন্ন শিল্পোন্নয়ন নিগম এবং ক্ষুদ্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সরকারি দফতরগুলিকে। উদ্দেশ্য ক্ষুদ্র শিল্পদ্যোগীরা ঋণ চাইলে মেলার মাঠে বসেই ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে কথা বলে নিতে পারবেন। প্রয়োজনে কেপিএমজি বা ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন নিগমের মতো সংস্থাগুলি পরামর্শ দেবে। জমির প্রয়োজন হলে হাত বাড়িয়ে দেবে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম। আর এই ধরনের তথ্য ও সহযোগিতার তল্লাশিতেই মেলার মাঠে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেল ক্ষুদ্র শিল্পদ্যোগীদের অনেককে।
এ দিন ছিল মেলার প্রথম দিন। কিছুটা প্রচারের অভাবেই ক্ষুদ্র শিল্প কর্তাদের সংখ্যা কম হলেও যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের মধ্যে উৎসাহের অন্ত ছিল না। ফাইল হাতে স্টলে-স্টলে ঘুরতে দেখা গিয়েছে অনেককেই। শিল্পদ্যোগীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন ব্যাঙ্ক ও সরকারি দফতরের কর্তারাও।
সরকারি ব্যবস্থায় যে কোনও ত্রুটি নেই, তা মেনে নিয়েছেন কেপিএমজি-র অন্যতম ডিরেক্টর সঞ্জয় দিবাকর-ও। তিনি বলেন, “ক্ষুদ্র শিল্প সংস্থাগুলির উচিত এই সুবিধাকে ব্যবহার করে নিজেদের কাজে উন্নতি করা।”
তবে এই সংস্থাটির কর্তারা এটাও মনে করছেন, ক্ষুদ্র শিল্পের প্রসারে এই ধরনের মেলার আয়োজন দুর্গাপুর, শিলিগুড়ি, হলদিয়ার মতো ছোট শহরেও করা দরকার। কারণ কলকাতার ব্যবসায়ীরা নানা ভাবে পরামর্শ পাওয়ার সুযোগ পেলেও জেলার শিল্পোদ্যোগীদের সেই সুযোগ অনেকটাই কম।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.