এক দশক ধরে ফাঁকা পড়ে আছে বাসস্ট্যান্ড |
দয়াল সেনগুপ্ত • দুবরাজপুর |
এক দশকের বেশি সময় আগে তৈরি হয়েছিল বাসস্ট্যান্ড। কিন্তু সেখানে বাস থামে না। অথচ শহরের যেখানে যেখানে বাস দাঁড়ায় সেই সব জায়গায় নির্দিষ্ট কোনও বাসস্ট্যান্ডও নেই। ফলে রোদ, বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা যেমন করতে হয়, তেমনি যানজটে পড়ে নাকাল হতে হয় দুবরাজপুর পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের।
যানজটের সমস্যা জটিল আকার নিয়েছে দুবরজাপুর শহরের মধ্য দিয়ে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক যাওয়ায়। এক কথায় শহরের এই সমস্যার সমাধন খুঁজতে চাইলে অবশ্যই একটি বাইপাসের প্রয়োজন। গত দু’বার ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ড এবং তার আগে ক্ষমতায় থাকা সিপিএম-সহ সব রাজনৈতিক দলই সে কথা মানে। সে কথা স্বীকার করে নিলেও সমস্যা মেটাতে কী ভেবেছে এতদিন ক্ষমতাসীন পুরবোর্ড?
১০ বছর আগে পুরসভার দায়িত্বে থাকা বামেরা অবশ্য এ জন্য বিদায়ী বোর্ডকেই দায়ী করছে। যার ব্যাখ্য হিসেবে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধন ঘোষ বলেন, “তখনও এই রাস্তাটি জাতীয় সড়ক আখ্যা পায়নি। |
আজও গাড়ি আসে না এই বাসস্ট্যান্ডে। —নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু ক্রমবর্ধমান যানবাহনের হার দেখে বহু আগেই দুবরাজপুর থেকে গ্রামীণ হাসপাতাল যাওয়ার রাস্তার ডান দিকে একটি বাসস্ট্যান্ড তৈরি করানো হয়েছিল। বাসও থামছিল কিছুদিন। উদ্দেশ্য ছিল, দুবরাজপুরের পাওয়ার হাউস মোড় থেকে পাহাড়েশ্বরের কাছাকাছি মূল রাস্তার সংযোগকারি একটি বাইপাস তৈরি করা। যাতে সেটি ওই বাসস্ট্যান্ডের পাশ দিয়ে যায় এবং ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমরা এ ব্যাপারে বেশ খানিকটা এগিয়েও গিয়েছিলাম। তার পর ক্ষমতা হারানোর পরে সেই ভাবনা বাস্তবায়িত তো হয়ইনি, উল্টে বাইপাস তৈরি হবে বলে যে ফাঁকা জায়গা আমরা চিহ্নিত করেছিলাম সেটা এখন বসতিপূর্ণ। আর বাসস্ট্যান্ডটি অবহেলায় পড়ে রয়েছে।” সমস্যার গুরুত্ব স্বীকার করে নিলেও গত দু’বার দুবরাজপুর পুরসভার প্রাক্তন কংগ্রেস পুরপ্রধান পীযুষ পাণ্ডে (বর্তমানে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন) সিপিএম নেতার দাবি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “যানজট ও যাত্রী প্রতীক্ষালয় না থাকা অবশ্যই সমস্যার। বাইপাসের দাবি নিয়ে আমরা বহুবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” তাঁর কটাক্ষ, “তবে যে বাসস্ট্যান্ডটি সিপিএম তৈরি করিয়েছিল, সেটা নির্বাচনী চমক ছাড়া আর কিছুই ছিল না। একটি অযৌক্তিক ভাবনা। যেখানে বাস ঢুকতে পারলেও বেরনোর রাস্তা নেই। কাজেই ওখানে বাস ঢোকার কোনও ব্যাপারই নেই। তাই দোষারোপ করেও লাভ নেই। কারণ, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার অনেক আগেই আমরা বাম সরকারের সর্বস্তরে বিষয়টি জানিয়েছিলাম কাজের কাজ কিছু হয়নি। আর বাইপাসের গল্প শুনিয়ে লাভ নেই। যখন ওঁরা ক্ষমতায় ছিলেন তখন জায়গা অধিগ্রহণ বা কেনা কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। বহুবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অনুরোধ করেছি। তবে বাইপাস হবে, এমন কোনও আশ্বাস জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মেলেনি।”
এ বারের ভোট প্রচারের সময় সমস্যাটি উঠলেও কোন পথে সমাধান, তার উত্তর মেলেনি। |