মাঠের লড়াইয়ে না জিততে পারলেও, মাঠের বাইরের লড়াইয়ে কিন্তু জয়ী র্যান্টি-লালকমলরাই।
রবিবার কলকাতা লিগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে রেলওয়েএফসি-র সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করল ইউনাইটেড স্পোর্টস। তবে ‘অদৃশ্য মার্কশিটে’ র্যান্টিদের টিমের পাশে লেখা থাকল তাদের একশো শতাংশ সাফল্যের কথা।
মাত্র ১৮ দিন আগে প্র্যাকটিস শুরু করেছে এলকো সাতোরির দল। এ দিনের ম্যাচের আগে নব্বই মিনিট কোনও অনুশীলন ম্যাচও খেলেনি ইউনাইটেড। রেলওয়ে এফসি-র বিরুদ্ধে এলকোর ৫-৩-২ স্ট্র্যাটেজিতে দীপকরা শুরুটা ভাল করলেও শেষ রক্ষে হল না। কারণ এখনও দলের মধ্যে বোঝাপড়াটাই গড়ে ওঠেনি ঠিক মতো। ফিটনেসেরও অভাব রয়েছে ফুটবলারদের। তার ওপর বারাসতের নতুন কৃত্রিম ঘাসের মাঠে প্রথম ম্যাচ খেলল ইউনাইটেড। সব মিলিয়ে ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভুলভ্রান্তিও বেশি করতে থাকল এলকোর দল। ৬-টি নিশ্চিত গোলের সুযোগও নষ্ট করলেন র্যান্টি-ধনচন্দ্ররা। স্বভাবতই পূরণ হল না ইউনাইটেডের গোলমেশিনের মনের ইচ্ছেও। সব ম্যাচে গোল করে দলকে জেতাতে চান র্যান্টি। অথচ প্রথম ম্যাচেই গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি। ম্যাচের পর তাই হতাশ গলাতেই র্যান্টি বলছিলেন, “আমরা ছয়-সাত গোলে জিততে পারতাম। নিজেদের ভুলেই সুযোগগুলো হাতছাড়া হয়েছে। তবে এই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের আই লিগের জন্য তৈরি হতে হবে।” |
এ ভাবেই আটকে গেল ইউনাইটেড। রবিবার বারাসতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর এলকো যেমন ফুটবলারদের ভুলগুলো বুঝিয়ে দিলেন, তেমনই আবার ভুল করার জন্য বেলো রজ্জাকের মতো অনেক ফুটবলার কোচের কাছে বকাও খেলেন। তবু এ দিনের ম্যাচ থেকে প্রাপ্তি ছিল ইউনাইটেড ফুটবলারদের লড়াইটাই। স্টেডিয়াম ছাড়ার আগে ইউনাইটেডের কোচ নিজেও বলে গেলেন, “এই ম্যাচে ফলাফল নিয়ে আমার বিশেষ মাথাব্যথা নেই। ৯০ মিনিট ম্যাচ খেলার পর আমি দলের পরিস্থিতিটা বুঝতে পারলাম। আই লিগের আগে ফুটবলাররাও নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নিতে পারবে। ওরা যে লড়াইটা করেছে তাতে আমি খুশি।”
রেলওয়ে এফসির দুই বিদেশি ফুটবলার ইকে এবং ইসেইন এ দিন দেরি করার কারণে টিমের সঙ্গে মাঠে পৌঁছতে পারেননি। আর শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য প্রথম একাদশে নাম থাকা সত্ত্বেও দুই বিদেশিকে খেলাননি রেলওয়ে এফসি-র কোচ সৌরীন দত্ত। সেখানে ইউনাইটেডের র্যান্টি-বেলো বা এরিকের মতো বিদেশি ফুটবলারদের দলের প্রতি টান, আবেগ, দায়িত্ববোধ দেখে মুগ্ধ সৌরীন। ম্যাচের পর বলেই ফেললেন, “ইউনাইটেডের কোচ আর ফুটবলারদের এই লড়াইকে সম্মান করতেই হয়।”
এ দিকে খুব তাড়াতাড়ি হয়তো র্যান্টিদের জন্য সুখবর আসতে চলেছে। ইউনাইটেডের ‘টাইটেল স্পনসর’ পাওয়ার বিষয়ে কথাবার্তা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এ দিন ক্লাবের অন্যতম কর্তা নবাব ভট্টাচার্য বললেন, “একজনের সঙ্গে কথা এগিয়েছে। হয়তো খুব তাড়াতাড়িই আমরা ফুটবলারদের মুখে হাসি ফোটাতে পারব। স্পনসরের সঙ্গে নতুন সভাপতিও হয়তো পেয়ে যাব।”
ইউনাইটেড স্পোর্টস: সংগ্রাম, অনুপম, দীপক, ধনচন্দ্র, বেলো, আসিফ, তপন, শৌভিক (বলদীপ), লালকমল, বিনীত, র্যান্টি। |