এএফসি কাপের ম্যাচ খেলাতে এসে দমদম বিমানবন্দরে দুর্ভোগের শিকার জাপানের তিন রেফারি। নেপথ্যে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের যোগাযোগ সমস্যা। শেষমেশ লাল-হলুদ কর্তাদের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ভোগান্তি থেকে রেহাই পেয়ে হোটেলে গেলেন সুয়োকার দেশের তিন ম্যাচ অফিসিয়াল।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফেডারেশনের রেফারি বোর্ডের প্রধান কর্নেল গৌতম কর বলছেন, “যোগাযোগে কিছু বিঘ্ন ঘটায় এই দুর্গতি। তবে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কলকাতার ক্লাব দেশের সম্মান বাঁচাল।”
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার মাঝরাতে। এএফসি কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল-সেমেন পাদাং ম্যাচ পরিচালনা করতে রাত বারোটা নাগাদ বিমানবন্দরে নামেন জাপানের তিন রেফারি লিদা জামপেই (মঙ্গলবার যুবভারতীতে বাঁশি মুখে নামবেন), সাগারা তোরু (সহকারী রেফারি) এবং ওচি শিনজি (সহকারী রেফারি)। এঁদের সঙ্গে ছিলেন চিনা তাইপেই-এর ম্যাচ কমিশনার চান চিন পো। চার রেফারি যে শনিবার রাতেই কলকাতা আসছেন তা জানতেন না লাল-হলুদ কর্তারা। ফলে রাত বারোটায় বিমানবন্দরে নেমে চারজনই অথৈ জলে পড়েন। কোথায় হোটেল? কে নিয়ে যাবে তা নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে জানতে চান তাঁরা। সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়ায় বিমানবন্দরেই সাড়ে চার ঘণ্টা ঠায় বসে থাকেন তাঁরা।
দীর্ঘ বিমানযাত্রার ক্লান্তি নিয়ে শেষ পর্যন্ত কুয়ালা লামপুরে এএফসি দফতরে যোগাযোগ করেন ম্যাচ কমিশনার চান চিন পো। অতীত পরিচয় থাকায় সহকারী রেফারি সাগারা তোরুও ফোন করেন গৌতম করকে। বিমানবন্দরে নিধিরাম সর্দারের মতো রেফারিরা বসে রয়েছে জানতে পেরেই এএফসি প্রতিনিধিও ফোনে ধরেন গৌতমবাবুকে। ভোররাতেই ফেডারেশনের রেফারি বোর্ডের প্রধান দিল্লি থেকে ফোন করেন লাল-হলুদের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারকে। ঘড়িতে তখন ভোর সওয়া চারটে।
লাল-হলুদের শীর্ষ কর্তা খবর পেয়েই দুই সদস্য তিলক দে এবং রাজীব রায়কে নির্দেশ দেন দ্রুত বিমানবন্দরে গিয়ে রেফারিদের হোটেলের ব্যবস্থা করার জন্য। ভোর পৌঁনে পাঁচটা নাগাদ চার রেফারিকে বিমানবন্দর থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম সংলগ্ন হোটেলে নিয়ে আসেন ওই দুই ক্লাব সদস্য।
এ দিন বেলায় গৌতমবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “প্রথমে ওদের আসার কথা ছিল শনিবার রাতে। কিন্তু পরে তা পরিবর্তন হয়। এএফসি জানিয়েছিল, রবিবার রাতে আসবেন ম্যাচ পরিচালকরা। ফেডারেশন তা জানিয়েও দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। কিন্তু ফের সফরসূচি পরিবর্তন হয়ে ওরা চলে আসেন শনিবার রাতেই। যে তথ্য ইস্টবেঙ্গল পায়নি।”
লাল-হলুদের অন্যতম শীর্ষকর্তাও বলছেন, “আমরা জানতামই না শনিবার রাতে ওঁরা আসবেন। ফোন পাওয়ার আধঘণ্টার মধ্যেই আমাদের ছেলেরা ওঁদের হোটেলে নিয়ে গিয়েছে। শুনলাম রেফারিরাও বেশ অপ্রস্তুত এই ঘটনায়।”
এ দিকে, রবিবার সকালে যুবভারতীতে অনুশীলন করে সেমেন পাদাং। দলের স্ট্রাইকার লাইবেরিয়ার এডওয়ার্ড জুনিয়র উইলসন বলছেন, “কলকাতার কৃত্রিম মাঠ চিন্তা বাড়িয়েছে। তবে সিঙ্গাপুরে এ রকম মাঠে আমরা আগেও খেলেছি।”
পাদাং কোচ জাফরি সাস্ত্রা যদিও যুবভারতীর ফিল্ড টার্ফকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বললেন, “ইস্টবেঙ্গলের খেলার ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। চিডি ভাল স্কোরার। মোগাও বিপজ্জনক। তবে আমরা হোম-অ্যাওয়ে দু’টো ম্যাচ জিতেই সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছি।” |