|
|
|
|
মুজফ্ফরনগরে কালো পতাকা অখিলেশকে, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
গোষ্ঠী সংঘর্ষ থিতিয়ে যাওয়ার বেশ কিছু দিন পরে মুজফ্ফরনগরে পা রেখেই অশান্তির আঁচ টের পেলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। আজ সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত কাওয়াল গ্রামে ঢুকতেই তাঁকে কালো পতাকা দেখান ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। মুখে ছিল সরকার-বিরোধী স্লোগান।
উত্তরপ্রদেশের এই জেলায় গোষ্ঠী-সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন ৪৭ জন। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। গোটা ঘটনায় অখিলেশ সরকার তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিল। তাতে খানিকটা প্রলেপ দিতেই এ দিন কাওয়াল গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী। এই গ্রাম থেকেই অশান্তি শুরু হয়েছিল মুজফ্ফরনগরে। মারা গিয়েছিলেন এই গ্রামেরই তিন জন। এ দিন অখিলেশকে সামনে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের বক্তব্য, সংঘর্ষ ঠেকাতে প্রশাসন কিছুই করেনি। তাঁরা চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে। অভিযোগ অখিলেশ তা নেননি। উল্টে গ্রামের বাইরের লোকজনের কথায় কান দিয়েছেন। |
|
স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে অখিলেশ যাদব। রবিবার। ছবি: পিটিআই। |
পরে সাংবাদিকদের অখিলেশ অবশ্য বলেন, “যা ঘটেছে তা দুঃখজনক। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, শুধু তাঁদের কাছে নয়, এ ঘটনা আমাদের কাছেও অত্যন্ত দুঃখের। শান্তি রক্ষায় আমরা আবেদন জানিয়েছি। যারা অশান্তি ছড়িয়েছে তাদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না। দোষীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে পারে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাও।” আগামী কালই মুজফ্ফরনগরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁর সঙ্গে থাকতে পারেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীও। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্য বিধানসভার বাদল অধিবেশন। মুজফ্ফরনগরের হিংসা নিয়ে অধিবেশনে বিরোধীরা সেখানেও সরব হবে, তা প্রত্যাশিতই। তাই সব মিলিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছিলেন অখিলেশ। কিন্তু স্থানীয় মানুষ তাঁকে কড়া বার্তা দিয়ে বুঝিয়েছে, প্রশাসনিক গাফিলতির জেরেই এই ঘটনায় এত মানুষের প্রাণ গিয়েছে। সপা নেতৃত্বের অন্দরেও এখন অখিলেশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
তবে অখিলেশের অভিযোগ, “এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় হাত রয়েছে কিছু রাজনৈতিক দলের। শুধু রাজনীতির জন্যই ঘটনা এত দূর গড়িয়েছে।” ওই এলাকায় এ আগে শান্তি ছিল বলেই জানিয়েছেন অখিলেশ। কিন্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে নানা কারণে। কোনও কোনও দল সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক ভিডিও প্রচার করেছে বলেও জানান অখিলেশ। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, “বিচারবিভাগীয় কমিশন ২৭ অগস্ট থেকে ঘটা সব ঘটনা খতিয়ে দেখবে। কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” গ্রামে অশান্তি ছড়াতে বাইরে থেকে লোকজন এসেছিল? তাঁর উত্তর, তদন্তেই সব বেরিয়ে আসবে।
মুজফ্ফরনগরের গোষ্ঠী সংঘর্ষের পিছনে উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতার দিকে আঙুল তুলেছে সিপিএম নেতৃত্বও। এ দিন মুজফ্ফরনগরের একাধিক এলাকা ঘুরে দেখেন সিপিএম সাংসদ সইদুল হক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুভাষিণী আলি। ওই সফরের প্রেক্ষিতে তৈরি রিপোর্ট থেকে সিপিএমের ধারণা, অগস্টের শেষ সপ্তাহে যখন প্রথম গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হয়, তখনই জেলা প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করলে এত বড় ঘটনা এড়ানো সম্ভব হত।
আগামী নির্বাচনে মোদীকে সামনে রেখে বিজেপি যে মেরুকরণের রাজনীতি করার পরিকল্পনা নিয়েছে তা রুখতে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে এক জোট করে একটি মঞ্চ গঠনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাম নেতৃত্ব। সংঘর্ষ বিধস্ত এলাকা ঘুরে এসে সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ মনে করছে, বিভিন্ন মহল থেকে সংঘর্ষে মদত দেওয়ার বিজেপি ও সমাজবাদী পার্টির তলে তলে হাত মেলানোর যে অভিযোগ উঠেছে, তা একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়।
|
পুরনো খবর: ‘মসিহা’র উপরেই ক্ষুব্ধ মুসলিমরা, উদ্বিগ্ন সপা |
|
|
|
|
|