সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ভাণ্ডার ধ্বংসে রুশ-মার্কিন প্রস্তাবকে স্বাগত জানাল চিন। এ ব্যাপারে এই প্রথম প্রতিক্রিয়া মিলল রাষ্ট্রপুঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ এই স্থায়ী সদস্যের কাছ থেকে। কিন্তু এ দিনই আবার রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের চুক্তি না মানলে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ফল ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
সিরিয়া-প্রশ্নে ভেটো দানে সক্ষম চিনেরও সমর্থন মেলায় রাষ্ট্রপুঞ্জের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের পক্ষে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ভাণ্ডার সম্পূর্ণ নষ্ট করে ফেলার প্রকল্প কার্যকর হতে পারে।
তবে জেনিভায় ওয়াশিংটন এবং মস্কোর স্থির করা ন’মাসের নিরস্ত্রীকরণ প্রকল্প যদি দামাস্কাস মেনে না চলে তা হলে ফের সে দেশে হামলা নিয়ে ভাবতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যে কারণে ওবামা জেনিভায় স্বাক্ষরিত চুক্তির পরেও বলেছেন, “আমরা যথেষ্ট এগিয়েছি। কিন্তু আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি রয়েছে। আর কূটনীতি যদি ব্যর্থ হয়, আমেরিকা কিন্তু আঘাত হানার জন্য তৈরি থাকবে।’’
ইজরায়েলও তাই এখনই এই চুক্তিতে খুব বেশি আশার আলো দেখছে না। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “যা আলোচনা হয়েছে, তার প্রয়োগ কী ভাবে হয়, সেটাই দেখার।” |
সিরিয়ার রাজধানীর বিরোধী অধ্যুষিত নানা এলাকায় এ দিনও যুদ্ধবিমান থেকে বোমাবর্ষণ করেছে আসাদ-বাহিনী। ২১ অগস্ট গ্যাস-হানার পরে আমেরিকা হামলার পথ থেকে সরে আসার কথা ঘোষণা করার পর থেকেই ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে আসাদ বাহিনী। বিরোধীরা এই অভিযোগটাই বার বার করছেন। এক আসাদ-সমর্থক তো খোলাখুলি বলেছেন, “মার্কিন হানা বন্ধ করতে রাশিয়ার কৌশল কাজ দিয়েছে। রাশিয়াই এর পরে আমাদের এমন সব অস্ত্র দেবে, যা রাসায়নিক অস্ত্রের চেয়েও বেশি শক্তিশালী।” আসাদ-বাহিনী ফের সক্রিয় হওয়ায় ক্রমশ হতাশা ছড়াচ্ছে বিরোধীদের মধ্যে। তাঁদের অনেকেই বলছেন, আমেরিকা সাহায্য করলে হয়তো রক্তপাত ঠেকানো যেত।
জেনিভার চুক্তিতে অবশ্য নিজেদের জয় দেখছে সিরিয়া। সে দেশের এক মন্ত্রী বলেছেন, এতে এক দিকে দেশের সঙ্কট মিটবে আর অন্য দিকে মার্কিন হামলাও বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।
রাশিয়া অবশ্য মুখে বলছে, তারা শুধুমাত্র আসাদকেই সমর্থন করছে, এটা ভাবলে ভুল হবে। রুশ প্রশাসনের বক্তব্য, “পশ্চিমী এবং আরব দেশগুলো যাতে নিজেদের ইচ্ছেমতো কোনও সিদ্ধান্ত সিরিয়ার উপরে চাপিয়ে না দেয়, সেটাই নজরে রাখছি আমরা।”
সিরিয়ার বিরোধীদের মধ্যে আল কায়দা জঙ্গিদের নিয়েও মাথাব্যথা রয়েছে মস্কোর।
ইতিমধ্যে সিরিয়ার বিরোধী জোট ন্যাশনাল কোয়ালিশন তাদের এক নেতাকে নির্বাসিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছে। কিন্তু এই পদক্ষেপে পশ্চিমী দেশগুলি খুশি হবে না বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। বরং পশ্চিমী শক্তি এখন চাইছে, বিবদমান দুই পক্ষ শান্তি বৈঠক করে পারস্পরিক আপসের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী প্রশাসন তৈরি করুক।
|