মেরামতি এবং জ্বালানি ভরার জন্য জাপানের ওহি অঞ্চলের ৪ নম্বর পরমাণু চুল্লি বন্ধ করে দেওয়া হল। আর এর ফলে সম্পূর্ণ পরমাণু বিদ্যুৎহীন হয়ে গেল জাপান। সেপ্টেম্বরের ২ তারিখ রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য জাপানের পশ্চিম দিকে ওহিতে ৩ নম্বর পরমাণু চুল্লি বন্ধ করে দেয় কানসাই ইলেকট্রিক পাওয়ার (কেপকো)। তার পর থেকে এত দিন এই ৪ নম্বর চুল্লিটিই ছিল জাপানের এক মাত্র চালু পরমাণু চুল্লি।
রবিবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এই ৪ নম্বর চুল্লি বন্ধের কথা ঘোষণা করে জানান, ২০১৪ সালের আগে জাপানে আর কোনও পরমাণু চুল্লি কাজ করবে না। আজ বিকেল থেকেই চুল্লিটির বন্ধের কাজ শুরু হবে। পুরোপুরি বন্ধ হবে সোমবার সকালে। এর ফলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশকে বিকল্প শক্তির উপরেই নির্ভরশীল হতে হবে বলে জানান শিনজো।
২০১১ সালের মার্চে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র ফুকুশিমা দাইচিতে একের পর এক বিস্ফোরণে আতঙ্ক ছড়ায় দেশবাসীর মনে। ১৯৮৬ সালের চের্নোবিল দুর্ঘটনার পরে এটাই বিশ্বের অন্যতম পরমাণু বিপর্যয় বলে মনে করা হয়। ফের ফুকুশিমা থেকে তেজস্ক্রিয় জল লিক হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।
ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর নাগরিক বিক্ষোভের জেরে দেশের ৫০টিরও বেশি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। তেজস্ক্রিয় বিপর্যয়ের আতঙ্কে ঘরছাড়া হন বহু জাপানবাসী। পরমাণু বিদুৎকেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি যেমন সৌরশক্তি, বা বায়ু চালিত শক্তি ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় নেহাতই কম। তাই বাইরে থেকে কয়লা এবং তেল আমদানি করতে হচ্ছে শিনজো সরকারকে। এর জন্য প্রচুর অর্থব্যয় হচ্ছে। ঘাটতি পূরণে দেশবাসীকে আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি কর দিতে হচ্ছে।
রবিবারই শিনজো দেশবাসীকে আশ্বাস দেন নয়া পরমাণু নীতি মেনেই ফের পরমাণু চুল্লি চালু করা হবে। কিন্তু বেশির ভাগ চুল্লির বয়সই চল্লিশের কাছাকাছি। তাই ফের পরমাণু কেন্দ্র চালু হলেও নিয়ম অনুযায়ী আর বেশি দিন কাজ করতে পারবে না চুল্লিগুলি। সব মিলিয়ে বেশ চাপের মুখেই শিনজো সরকার।
|