শৃঙ্খলা ফেরাতে গিয়ে হেনস্থা শিক্ষকদের
স্কুলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন শিক্ষকেরা। ছাত্রদের একাংশ তা মানতে নারাজ। শিক্ষক-ছাত্র দ্বন্দ্বের জেরে ধনেখালির এক স্কুলে চড়াও হলেন গ্রামবাসীরা। হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হল শিক্ষকদের। ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের কয়েক জন ইস্তফাও দিয়েছেন স্কুলের নানা কমিটির থেকে। পড়াশোনা লাটে উঠেছে স্কুলটিতে।
ঘটনা হুগলির ধনেখালির নারায়ণপুর এবি উচ্চ বিদ্যালয়ের। গ্রামীণ এলাকার ওই স্কুলটির এমনই পরিস্থিতি, কেউ বিশেষ মন্তব্যই করতে চাইছেন না। প্রধান শিক্ষক কার্তিকচন্দ্র পাল শুধু বলেন, “সমস্যা একটা হয়েছে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর চেষ্টা করেছি। সম্পাদক বাইরে রয়েছেন। তিনি এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির কিছু ছাত্রের মধ্যে মাদকাসক্তি দেখা দেওয়ায় শিক্ষকেরা কড়া পদক্ষেপ করেন। স্কুলে ছাত্রদের মোবাইল ফোন আনতে নিষেধ করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে আসাও আবশ্যিক করা হয়। ছাত্রদের একটি অংশ অবশ্য সে কথা মানতে নারাজ। তাদের মধ্যে কয়েক জন শনিবার দাবি করে, মোবাইল ব্যবহার করায় কারও কোনও অসুবিধা হয়নি, তা সত্ত্বেও শিক্ষকেরা মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন। দূরত্বের কারণে কখনও স্কুলে আসতে দেরি হতেই পারে। শিক্ষকেরা অন্যায় ভাবে ছাত্রদের শাস্তি দেন।
দিন কয়েক আগে ‘শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকদের ফুটবল খেলা হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, মূলত একাদশ শ্রেণির কিছু ছাত্র তাঁদের চোরাগোপ্তা লাথি মারে। মাঠের বাইরে থেকেও কিছু ছেলে শিক্ষকদের কটূক্তি করে। গত সোমবার ওই ছাত্রদের স্টাফ-রুমে ডেকে পাঠান শিক্ষকেরা। পরিচালন সমিতির সভাপতিকেও তাঁরা বিষয়টি জানান। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস কয়েক দিন নেওয়া হবে না বলে শিক্ষকরা ঠিক করেন। এই সিদ্ধান্তে ওই ছাত্ররা তেতে ওঠে। অভিযোগ, মঙ্গলবার তারা প্রকাশ্যেই শিক্ষকদের কটু কথা বলতে শুরু করে। এক শিক্ষক মেজাজ হারিয়ে কয়েক জন ছাত্রকে দু’ঘা দেন। তা নিয়ে ছাত্রদের বিক্ষোভে সামিল হন কিছু গ্রামবাসীও। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে স্কুলের গেট ভেঙে ফেলা হয়। পরের দিন ছাত্র, অভিভাবক এবং গ্রামবাসীদের একাংশ শিক্ষকদের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের ঘেরাও করা হয়।
শেষ পর্যন্ত পড়ুয়াদের সামনেই হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে হয় ২০-২২ জন শিক্ষককে। এর পরেই স্কুলের পরিচালন সমিতি এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল থেকে ইস্তফা দেন ৮ শিক্ষক।
শিক্ষকদের দাবি, ঘটনার পিছনে স্কুলের পরিচালন সমিতির কয়েক জন সদস্যের ইন্ধন রয়েছে। পরিচালন সমিতির সভাপতি অষ্টধর মাল বলেন, “ছাত্রদের সামনে শিক্ষকেরা হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে আছেন, এমন দৃশ্য ভাবা যায় না। অথচ, এখানে তাই হয়েছে। স্কুলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাওয়ায় পরিস্থিতি এই দিকে গড়াল।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.