প্রশিক্ষণ শেষ, তবু থমকে কাজ
মাউসে ক্লিক করেই খুনি ধরতে প্রকল্প
প্রকল্পটা চালু হলে বাড়িতে বসেই (ইন্টারনেট যোগাযোগ-সহ কম্পিউটার থাকলে) থানায় অভিযোগ জানানো, অপরাধ বা অপরাধী সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার মতো কাজ জনতা সেরে ফেলতে পারত মাউস-ক্লিকে। অপরাধীদের ধরতে বা তদন্তে সুবিধা হত পুলিশেরও। কিন্তু প্রাথমিক কিছু কাজ এগোলেও প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার না আসায় ‘ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সিস্টেম’ (সিসিটিএনএস) প্রকল্পের কাজ কবে শুরু হবে, তা ঠিক করে বলতে পারছেন না কেউ।
২০০৯ সালের ১৯ জুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছিল এই প্রকল্পের। রাজ্যের পুরুলিয়া জেলা এবং বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। বাকি জেলাগুলিতে কম্পিউটার-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী এসে পৌঁছে গিয়েছে। সেগুলি বসানোর কাজও শুরু হবে শীঘ্রই। ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নেওয়াও শেষ হয়েছে কর্মীদের। তবে সফটওয়্যারের অভাবে পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় বাকি প্রকল্প কার্যত অথৈ জলে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞেরা।
রাজ্যে এই প্রকল্পের রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে স্টেট ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো। এসসিআরবি-র ডিজি রাজ কানোজিয়া বলেন, “কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার আসবে। সেই সফটওয়্যার ডেভলপমেন্টের কাজ চলছে। আমরা রাজ্যে অনেকটা কাজ এগিয়ে রেখেছি। পাইলট প্রকল্পের এলাকায় কম্পিউটার বসে গিয়েছে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বাকি জেলাগুলিতে কম্পিউটার বসানো এবং প্রশিক্ষণের কাজ চলেছে।” তাঁর দাবি, প্রকল্পের অগ্রগতিতে দেশের হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ তিন নম্বরে রয়েছে।
দেশের প্রায় ১৪ হাজার থানাকে সাইবার-জালে জুড়ে দেওয়ার জন্য প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। দেশের প্রতিটি থানার সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ থাকবে। তদন্তের হাল সহজেই জানতে পারবেন পুলিশ-কর্তারা। সন্দেহভাজনদের উপরে নিয়মিত নজর রাখা যাবে।
‘সিসিটিএনএস’ চালু হলে বাড়িতে বসেই ইন্টারনেট সংযোগ থাকা কম্পিউটার ব্যবহার করে থানায় অভিযোগ করা যাবে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ঠ থানা তা নথিভুক্ত করে অভিযোগকারীকে একটি নম্বর দেবে। সেই নম্বরের ভিত্তিতে অভিযোগকারী তদন্তের অগ্রগতি, পুলিশি ব্যবস্থা-সহ সমস্ত বিষয়ে জানতে পারবেন। এ ছাড়া, কম্পিউটারের মাধ্যমে অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য ও অপরাধীদের সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য জানাতে পারবেন সাধারণ নাগরিকেরা। তথ্যপ্রদানকারীর পরিচয় প্রকাশ করা হবে না।
এই ব্যবস্থা চালু হলে সাধারণ মানুষের হয়রানি কমবে পুলিশও দ্রুত তদন্ত ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হবে। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও, ‘ক্লোজড সার্কিট টিভি’-র (সিসিটিভি) ফুটেজে তা ধরা থাকবে। ফলে, পুলিশ ফিরিয়ে দিতে পারবে না কারওকে। প্রকল্প চালু হলে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং এফআইআর কম্পিউটার এবং ম্যানুয়াল, দু’ভাবেই নথিবদ্ধ করতে হবে।
এই ব্যবস্থায় অপরাধীদের নাম, চেহারার বিবরণ, বয়স, ছবি, ঠিকানা-সহ সমস্ত তথ্য থাকবে। দেশের যে কোনও থানার তদন্তকারী অফিসার সেই তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন। অভিযুক্তকে ধরার জন্য প্রয়োজনীয় ‘মেসেজ’ পাঠাতে পারবেন পুলিশকর্মীরা। ফলে, প্রয়োজনে ভিন্ন রাজ্যের একাধিক থানার পুলিশ একজোট হয়ে কাজ করতে পারবে।
এত সুবিধে থাকা সত্ত্বেও, রূপায়নের দোরগোড়ায় এসে থমকে রয়েছে সিসিটিএনএস প্রকল্পটি। কবে সফটওয়্যার আসবে, সেই আশায় দিন গুনছে পুলিশ, আর রাজ্যবাসীও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.