এক কিশোরীর শ্লীলতাহানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লেক থানা ও টালিগঞ্জ থানা এলাকার দুই পাড়া। পুলিশ গণ্ডগোল থামাতে গেলে তাদের লক্ষ করে উড়ে আসে ইটের টুকরো। জখম হন এক কনস্টেবল। পুলিশ জানায়, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয় দুই যুবক। ওই দু’জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে তাদের চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সেখানেও ভাঙচুর চালায় কয়েক জন। ওই ঘটনায় তিন জন গ্রেফতার হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে যারা জড়িত বলে অভিযোগ, তাদের অনেকেই মত্ত অবস্থায় ছিল। ওই দুই পাড়ার মধ্যে এর আগেও গোলমাল হয়েছে। শুক্রবার রাতের ঘটনায় দু’পক্ষই লেক ও টালিগঞ্জ থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত শ্লীলতাহানি, পুলিশকে মারধর বা সংঘর্ষের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাত এগারোটা নাগাদ। মনোহরপুকুর রোডের অদূরে লখার মাঠ এলাকার একটি ক্লাবের ছেলেরা গণেশ পুজোর বিসর্জন সেরে মতিলাল নেহরু রোড ধরে ফিরছিল। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ওই কিশোরীর অভিযোগ, সে রাস্তার পাশে বসে ছিল। লখার মাঠ এলাকার ছেলেরা তার হাত ধরে টানাটানি করে। সে প্রতিবাদ জানায়। তার পরে নিজের পাড়া মতিলাল নেহরু রোডের ছেলেদের ঘটনাটি জানায়।
কিশোরীর অভিযোগকে কেন্দ্র করে মতিলাল নেহরু রোডের বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে লখার মাঠ এলাকার ছেলেদের তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে তা হাতাহাতি ও সংঘর্ষের চেহারা নেয়।
সংঘর্ষ থামাতে বড় বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশকর্তারা। তত ক্ষণে দুই গোষ্ঠীর লোকজন একে অন্যকে লক্ষ করে যথেচ্ছ বোতল ও ঢিল ছুড়তে শুরু করে দিয়েছে। তাতে দু’পক্ষের দু’জন জখম হয়। ইটের আঘাতে গুরুতর জখম হন লেক থানার কনস্টেবল গোবিন্দ সরকার। রাতেই তাঁকে ভবানীপুরের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিত্সকেরা শনিবার জানিয়েছেন, ওই পুলিশকর্মী বিপন্মুক্ত।
আহত দুই যুবককে শরত্ বসু রোডের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁদেরই পাড়ার লোকজন। ওই হাসপাতালে আহতদের সঠিক চিকিত্সা হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে হাসপাতাল চত্বরেও গোলমাল বাধায় উত্তেজিত কিছু যুবক।
পুলিশ জানায়, ওই হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়। মারধর করা হয় হাসপাতালের কর্মীদের। পরে প্রাথমিক চিকিত্সার পরে আহত দুই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে রাতে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। |