তপসিয়ায় ধৃত ১
বোনের শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে মারে জখম তিন দাদা
শম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর জখম হলেন তার তিন দাদা। ছেলেদের বাঁচাতে গিয়ে জখম হন ওই কিশোরীর বাবাও। শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ৬৪ নম্বর তপসিয়া রোডে। আহত তিন যুবক সাদাব আলম, মহম্মদ জায়েদ ও মহম্মদ মেহতাব ন্যাশনাল মেডিক্যালে ভর্তি। এ দিকে, শ্লীলতাহানি ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে তপসিয়া সেকেন্ড লেনের বাসিন্দা রিয়াজ খান ওরফে রাজ নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এফআইআর দায়ের করা হয়েছে স্থানীয় আরও দশ যুবকের বিরুদ্ধে। তবে তারা পলাতক।
তপসিয়া রোডের বাসিন্দা, দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী স্কুলের ওই ছাত্রী শনিবার বাড়িতে বসে জানায়, স্থানীয় কোহিনুর মার্কেটের কাছে এক শিক্ষকের বাড়ি থেকে পড়ে ফিরছিল সে। বাড়ির কাছে আসতেই সে শোনে, তিন-চার জন যুবক তার উদ্দেশে কটূক্তি করছে। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ওই যুবকেরা তিন-চার দিন ধরেই তাকে উত্ত্যক্ত করছিল। ওই রাতে দুই যুবক তার হাত ধরে টানে। ভয় পেয়ে মোবাইলে ফোন করে সে ডেকে নেয় তিন দাদাকে। তাঁরা আসতেই কোনও রকমে পাশ কাটিয়ে তাদের দোতলার ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ে ওই কিশোরী।
সেই কিশোরী ও তার মা নিশাত বিবি। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।
ছাত্রীর বাবা, পেশায় এমব্রয়ডারি কারখানার মালিক মহম্মদ কামরুজ্জামান শনিবার জানান, বোনের ফোন পেয়ে সাদাব, জায়েদ ও মেহতাব কারখানা থেকে বেরিয়ে ছুটে যায়। যে চার যুবক তাঁর মেয়েকে হাত ধরে টেনে রেখেছিল, তাদের সঙ্গে তাঁর ছেলেদের ধস্তাধস্তি হয়। প্রতিবেশী কয়েক জন যুবক ঘটনার প্রতিবাদ করায় তখনকার মতো অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়। কিন্তু রাত পৌনে দশটার কিছু পরে জনা কুড়ি সশস্ত্র যুবক এসে তাঁর তিন ছেলের উপর চড়াও হয়। তিনি বলেন, “আমি কারখানায় ছিলাম। হঠাত্‌ শুনি ছেলেদের ভোজালি দিয়ে মারা হচ্ছে। দৌড়ে গিয়ে দেখি, তিন ছেলের শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। দু’হাতে মুখ ঢেকে রাস্তায় বসে পড়েছে তারা। চিত্‌কার করে সশস্ত্র ওই যুবকদের দিকে তেড়ে যেতেই ওরা আমার হাতেও ক্ষুর চালিয়ে দিল।”
ছাত্রীর মামা, পেশায় ব্যবসায়ী মহম্মদ ওয়াসিম আখতার জানান, ভাগ্নেদের মারা হচ্ছে জেনে তিনিও ঘটনাস্থলে যান। দেখেন, লোহার রড-ব্লেড-ক্ষুর-ভোজালি হাতে একদল যুবক এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। ওয়াসিম বলেন, “যাওয়ার আগে ওরা হুমকি দিয়ে যায়, থানায় গেলে খারাপ হবে।” ওই কিশোরীর মা নিশাত বিবি বলেন, “ঘরে ঢুকেই মেয়ে আমায় জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে। দাদাদের ওই ভাবে মারা হয়েছে শুনে মেয়ে সারা রাত ঘুমোতে পারেনি।”
হাসপাতালে জখম তিন যুবক

জায়েদ

সাদাব

মেহতাব
—নিজস্ব চিত্র।
রাতেই সাদাব, জায়েদ, মেহতাব এবং কামরুজ্জামানকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিত্‌সার পরে কামরুজ্জামানকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাকিদের ভর্তি করানো হয়। রাতেই ওই কিশোরীর আর এক দাদা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর পরেই ধরা হয় রিয়াজকে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তপসিয়া সেকেন্ড লেন এবং তপসিয়া রোডের যুবকেরাই হামলা করে। তাঁরা জানান, বছরখানেক ধরে সঞ্জু নামে এক যুবক এলাকায় উপদ্রব করছে। শুক্রবার সে তার সঙ্গী রিয়াজ, কলিম, হায়দর, করিম-সহ জনা কুড়ি সশস্ত্র যুবককে নিয়ে হামলা করতে আসে।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তিলজলা ও তপসিয়া থানায় গুন্ডামির পুরনো অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বর্তমানে ওই যুবকেরা বাড়ি তৈরির মালমশলা সরবরাহ এবং নানা কাজের দালালি করে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার একটি ক্লাবের সামনে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ক্লাবের সদস্যেরা জানান, তাঁরা শুক্রবার রাতে এলাকায় ছিলেন না। কারা হামলা চালিয়েছে, তা তাঁরা জানেন না। কামরুজ্জামানের ফ্ল্যাটবাড়ির তলায় এলাকার জনা পাঁচেক যুবক জটলা করছিলেন। তাঁরা জানালেন, গত দু’বছরে অশান্ত হয়ে উঠেছে তপসিয়া রোড, গোলাম জিলানি রোড এলাকা। দিনের বেলাতেও সশস্ত্র যুবকেরা এলাকায় ঘুরে বেড়ায়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.