বণিকসভার অনুষ্ঠানে তাঁর সেই অর্থমন্ত্রীর ভূমিকাতেই যেন ফিরে গেলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে নিজের আমলে নেওয়া পদক্ষেপের কারণ ব্যাখ্যা করে বর্তমান অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে জবাবও দিলেন তিনি।
আগের আমলে নেওয়া কিছু সিদ্ধান্তের উপরে সম্প্রতি দেশের আর্থিক দুরবস্থার দায় চাপিয়েছিলেন চিদম্বরম। মন্দার সময়ে দেওয়া আর্থিক প্যাকেজেই তাঁর আপত্তি বলে মনে করা হয়েছে। এই প্যাকেজ দেওয়ার সময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। পরে অবশ্য কিছুটা সুর নরম করে চিদম্বরম জানিয়েছিলেন, “প্যাকেজ না দিয়ে তখন উপায় ছিল না।” কিন্তু বর্তমান আর্থিক সমস্যার অন্যতম কারণ যে সেই সিদ্ধান্তই, সে কথা জানাতে ভোলেননি তিনি।
শনিবার দেশের সব চেয়ে পুরনো বণিকসভা ‘বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর ১৬০ তম সাধারণ বার্ষিক সভায় যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন প্রণববাবু। বক্তৃতায় চিদম্বরমের নাম না করে সেই সময়ে নিজের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করলেন প্রণববাবু। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেন, “২০০৮-০৯ সালে বিশ্ব বাজার জুড়ে মন্দার ধাক্কায় ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হারও ৯ থেকে ৬ শতাংশে নেমে এসেছিল। সে সময়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে যথাযথ ব্যবস্থাই নিয়েছিল সরকার।” |
প্রণববাবুর দাবি, সেই সিদ্ধান্তের ফলেই মন্দার প্রভাব কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছিল। তিনি জানান, যে কোনও দেশের অর্থনীতিতেই ওঠা-পড়া থাকে। তাই হতাশ হওয়ার কারণ নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, “দেশের অর্থনীতি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সঠিক পদক্ষেপ নিলে সেই সমস্যা কেটে যাবে।” কী এই সঠিক পথ সেই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি জানান, প্রাধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রিসভা এ বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন। কিছুটা হালকা সুরেই তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে বলার যোগ্য লোক নই।” দেশের অর্থনীতির সমস্যা হিসেবে তিনি তুলে ধরেন টাকার পড়তি দাম, মূল্যবৃদ্ধির চাপ, আর্থিক ঘাটতি, ধীর গতির বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজারের নেতিবাচক প্রভাবকে।
প্রসঙ্গত আজ, রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। ঘাটালের বিদ্যাসাগর স্কুল এবং মেদিনীপুরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন তিনি। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে রাষ্ট্রপতির কপ্টার ঘাটালের অরবিন্দ স্টেডিয়ামের হেলিপ্যাডে নামবে। তারপর তিনি যাবেন বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে। সেখান থেকে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সওয়া একটায় তিনি কলকাতা রওনা হবেন। |