‘নিধিরাম’ হাওড়ার কমিশনারেট,
নতুন মহাকরণ পাড়ায় প্রশ্নে সুরক্ষা
র কিছু দিন পরেই হাওড়ার এইচআরবিসি বিল্ডিংয়ে হবে অস্থায়ী মহাকরণ। মন্দিরতলার ১৪ তলা বাড়িটিতে তাই এখন সাজসাজ রব। কিন্তু বাড়িটি যে পুলিশ কমিশনারেট এলাকায়, তার নিরাপত্তার পরিকাঠামো কতটা উন্নত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে হাওড়া সিটি পুলিশের অন্দরমহলেই।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই বহুতলের ভিতর ও বাইরের চত্বরের সুরক্ষায় থাকবে কলকাতা পুলিশ। বিদ্যাসাগর সেতু থেকে যে অ্যাপ্রোচ রোড ধরে গাড়িগুলি ওই বাড়ি যাবে, তার যান নিয়ন্ত্রণেও থাকছে তারাই। কিন্তু ওই ভবনের পাঁচিলের বাইরের পুরো দায়িত্বই থাকছে হাওড়া সিটি পুলিশের হাতে। আর সেখানেই উঠেছে পরিকাঠামোগত প্রশ্ন। এ বিষয়ে কোনও আলোচনাই করতে রাজি হননি হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে। তাঁর কথায়, “যা দরকার, তা মহাকরণে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, এইচআরবিসি-র ওই বাড়িটি থাকবে শিবপুর থানার অধীনে, যেটি কমিশনারেটের সব থেকে বড় এলাকাভুক্ত হওয়ায় যথেষ্ট অপরাধপ্রবণ এবং আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনাও সব থেকে বেশি। প্রশ্ন উঠেছে, শিবপুর থানা ভেঙে ছোট না করা হলে এবং কমিশনারেটের পরিকাঠামোর উন্নতি না হলে অস্থায়ী মহাকরণের নিরাপত্তা কতটা সামলাতে পারবে হাওড়া সিটি পুলিশ?
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১১ সালে কমিশনারেট তৈরির সময়েই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ৮টি থানাকে ভেঙে নতুন থানা বাড়ানো হবে। মার্চে বালি ও জগাছা থানা ভেঙে নতুন চারটি থানা তৈরি হয়। পুলিশকর্মীদের কথায়, প্রায় প্রতিটি থানাতেই কর্মী অনেক কম। পর্যাপ্ত নয় মহিলা কর্মীও। সমস্যা রয়েছে নজরদারির গাড়ি-মোটরবাইকের সংখ্যা নিয়ে। আবার যে কয়েকটি গাড়ি রয়েছে, সেগুলিও ভুগছে চালকের সমস্যায়।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়া কমিশনারেটে কর্মী কম থাকাতেই ১৪ তলা বাড়িটির ভিতর-বাইরের নিরাপত্তার দায়িত্ব কলকাতা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সীমানা পাঁচিলের বাইরে পুরো দায়িত্ব কমিশনারেটের। সেখানেই উঠছে প্রশ্ন। পুলিশ অফিসারদের কথায়, বড় ধরনের মিটিং-মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ সামলাতে বা ভিআইপিদের নিরাপত্তায় আলাদা ‘সিকিউরিটি উইং’ নেই কমিশনারেটে। সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য নেই উচ্চ পর্যায়ের অফিসারও। পাশাপাশি বিক্ষোভ-মিছিলের তথ্য জানতে যে ধরনের স্পেশাল ব্রাঞ্চ কিংবা ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ প্রয়োজন হয়, হাওড়ায় তা-ও কার্যত নেই বললেই চলে। স্পেশাল ব্রাঞ্চে পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাজ ছাড়া বিশেষ কিছু হয়ও না। নেই স্পেশালাইজড আর্মড ফোর্সও।
প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, মন্ত্রী-আমলাদের সমস্ত গাড়ি থাকবে বিদ্যাসাগর সেতুর নীচে। কিন্তু তার দায়িত্বে কারা থাকবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। কমিশনারেটের অফিসারদের মতে, সমস্যা রয়েছে আরও। দু’বছর পরেও হাওড়া কমিশনারেটে বম্ব স্কোয়াড বা ডগ স্কোয়াড হয়নি। এক অফিসার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ডিউটি থাকলে বিভিন্ন থানা থেকে লোক নিয়ে যাওয়া হয়। মহাকরণ চালু হলেও হয়তো তা-ই করা হতে পারে। তখন তো থানাগুলি প্রায়দিন ফাঁকাই থাকবে।”
মহাকরণ সূত্রে খবর, পনেরো দিন আগেই হাওড়া কমিশনারেট একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে। বলা হয়েছে, আরও দায়িত্ব সহকারে নিরাপত্তা দেখভালের জন্য স্পেশাল ব্রাঞ্চে ডিসি ও সিকিউরিটিতে এসি পদমর্যাদার অফিসার প্রয়োজন। দরকার শিবপুরকে ভেঙে চ্যাটার্জিহাট ও বটানিক্যাল গার্ডেন থানা এবং সাঁতরাগাছি ট্রাফিক গার্ড তৈরি করা। কমিশনারেটে অনুমোদিত কর্মী সংখ্যার অতিরিক্ত ৪০০ জন, ২০টি মোটরবাইক, ৬টি ছোট গাড়ি ও ৩টি মাঝারি গাড়িও লাগবে বলে জানানো হয়েছে।
আগামী ৫ অক্টোবর থেকে রাজ্য প্রশাসনের ঠিকানা বদলের সঙ্গেই হাওড়া কমিশনারেটের ঢাল-তরোয়াল বিহীন নিধিরাম সর্দারের দশা ঘুচবে কি না, সেটাই এখন দেখতে চান হাওড়ার পুলিশকর্মীরা।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.