নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
সাত দিনের মধ্যে পুরসভার মেয়র পারিষদকে অপসারণের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়ার যে দাবি তুলেছিল কংগ্রেস, তা মানলেন না মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, শুক্রবার অপসারণের পরে প্রথম বৈঠকেও কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখাবেন বলে জানা গিয়েছে।
পুরসভার প্রশাসনিক পদে বহাল থেকে মেয়রের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা ও প্রকাশ্যে পুরসভার বিভিন্ন বেনিয়ম নিয়ে মুখ খোলার অভিযোগে কংগ্রেসের মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) গোলাম সরওয়ারকে অপসারণ করেন মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা। প্রদেশ নেতৃত্বের নির্দেশে সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ১২ জন কংগ্রেস কাউন্সিলর মেয়রকে চিঠিও দেন। বুধবার সেই সাত দিনের সময়সীমা পেরোলেও চিঠির কোনও জবাব দেননি মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। জিজ্ঞেস করা হলে বিষয়টি পুরসভার অভ্যন্তরীণ সমস্যা বলে এড়িয়ে যান তিনি। তবে পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেন, “মেয়রের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার লিখিত ভাবে বিষয়টি জানাবেন।” |
তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু সাত দিন পরেও বিষয়টি নিয়ে মেয়রের কোনও হেলদোল না থাকায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের অন্যান্য কাউন্সিলরেরা। গোলাম সওয়ার অনুগামি কাউন্সিলাররা জানিয়েছেন, শুক্রবার অধিবেশনের শুরুতেই বিক্ষোভ দেখাবেন তাঁরা। কেন একজন মেয়র পারিষদকে রাতারাতি আলোচনা ছাড়াই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল, তা জানতে চাইবেন। কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা জানান, মেয়র সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে বা এ প্রসঙ্গে তাঁর মতামত সন্তোষজনক না হলে পুরসভার অধিবেশন বানচাল করে দেবেন তাঁরা। অমরনাথবাবু বলেন, “বিক্ষোভ হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে যাতে তা লাগামছাড়া না হয় তা দেখা হবে।” আর নিজের অপসারিত হওয়া নিয়ে মেয়রের গোলাম সরওয়ার জানিয়েছেন, বিষয়টি অগণতান্ত্রিক। প্রদেশ নেতৃত্ব সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে। এরপরেও মেয়র যদি নিজের সিদ্ধান্ত অটল থাকেন তবে তিনি আইনের পথে যাবেন।
আসানসোলের রব্বানিয়া উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের প্রশাসকের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে গোলাম সরওয়ারকে। জেলার সহকারি স্কুল পরিদর্শক অজিত হাজরা জানান, এই স্কুলে সেই অর্থে কোনও পরিচালন সমিতি নেই। কিন্তু স্কুলের স্বাভাবিক কাজকর্ম দেখার জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগ করে জেলা শিক্ষা দপ্তর। কুলটি পুরসভা এলাকায় স্কুলটি হওয়ার সুবাদে পুরসভার মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) গোলাম সরওয়ারকে প্রশাসকের পদে বসান হয়। কিন্তু মেয়রের সিদ্ধন্তে গোলামবাবু পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পরে তাঁকে স্কুলের প্রশাসকের পদ থেকেও মঙ্গলবার সরানো হয়েছে। |