শিক্ষাক্ষেত্রে অশান্তি রুখতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সব কলেজের কাছে পুলিশ বুথ চালু করবে জেলা প্রশাসন। ছাত্র সংঘর্ষ ও শিক্ষক নিগ্রহের মতো অভিযোগের মধ্যে রাজ্যের বেশ কিছু কলেজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গিয়েছে এ জেলার হরিরামপুর, গঙ্গারামপুর-সহ বালুরঘাট কলেজের নামও। সম্প্রতি ইটাহার কলেজে টুকলিতে বাধা পেয়ে অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনার পর পর হরিরামপুর কলেজে হাতেনাতে নকল ধরে নিগৃহীত হন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় -এর পরীক্ষা নিয়ামক সনাতন দাস-সহ শিক্ষাকর্মীরা। ইটাহারের ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্তদের মধ্যে দুই জনকে ধরলেও হরিরামপুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের পুলিশ ধরতে পারেনি। হরিরামপুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে রাজ্যপাল রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু হরিরামপুরের কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে পারেননি বলে এসডিপিও স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “সেই সময় কলেজে পুলিশ ছিল না। অধ্যক্ষের কাছে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে নালিশ জানাতে বলে সাড়া মেলেনি।”
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “কলেজগুলিতে এ ধরণের সমস্যা সমাধানে পুলিশ-বুথ চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। দুর্গাপুজোর পরই জেলার প্রতিটি কলেজের সামনে পুলিশ বুথ চালু হবে।” তিনি জানান, বালুরঘাটে দুটি কলেজের পাশপাশি পতিরাম, গঙ্গারামপুর, তপন, বুনিয়াদপুর এবং হরিরামপুর কলেজে পুলিশ বুথ বসবে। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জেলার ৭টি কলেজের সামনে পুলিশ বুথ খোলা হবে। বুথগুলি কার্যত ছোট থানার মত কাজ করবে। সেখানে কলেজে অশান্তি বন্ধের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগের বিষয়গুলিও দেখা হবে। ১ মহিলা-সহ ৪ পুলিশকর্মী কলেজ বুথের ডিউটিতে থাকবেন।”
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের এই উদ্যোগকে ছাত্রসংগঠনগুলি স্বাগত জানিয়েছে। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক তাপস মণ্ডল বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ ভাল। তবে পুলিশ বুথ কতটা কার্যকর হবে, তা সময় বলবে। কলেজে বহিরাগতদের আনাগোনা বন্ধে বুথের পুলিশ কর্মীরা সক্রিয় হবেন।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অতনু রায় বলেন, “দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ রাজ্যে দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। আমরা এই উদ্যোগকে সমর্থন ও সহযোগিতা করব।”
কলেজে পুলিশ বুথ চালুর খবরে সন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষক, পড়ুয়া, অভিভাবকেরাও। বালুরঘাট কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তারাশঙ্কর বন্দো এই দিন বলেন, “গোলমালের সময় বহু ক্ষেত্রে থানা থেকে পুলিশ যেতে দেরি হয়। কলেজ সংলগ্ন বুথ কার্যকর হবে।” অভিভাবকদের বক্তব্য, “প্রথম বর্ষের ছাত্রীদের ইভটিজিংয়ের মুখে পড়তে হয়। তাই সেখানে বুথ কার্যকর হবে।” |