গণ শুনানিতে পুলিশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ১০ অভিযোগ জমা পড়ল গণ শুনানিতে। বুধবার শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়, সদস্য নারায়ণ চন্দ্র শীল, রেজিস্ট্রার রবীন্দ্রনাথ সামন্ত। সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে এক গুচ্ছ অভিযোগ জমা পড়ে। এ দিন চেয়ারম্যান জানান, তারা বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছতে চান। তাই এ ভাবে শুনানি আয়োজন হচ্ছে। কোচবিহারে তারা শুনানি করেছেন। এ বার শিলিগুড়িতে করা হচ্ছে। পরে অন্য জেলাগুলিতেও তাঁরা যাবেন।
শিলিগুড়ির একটি আর্ট স্কুলের কর্ণধার সোমেশ ঘোষের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে যৌন হেনস্থা এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ হয়েছে। অথচ পুলিশ অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি। তরুণীর পরিবারের লোকেরা শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের কাছেও মঙ্গলবার গিয়েছিলেন। তিনি আশ্বাস দেন। এ দিন মানবাধিকারিক কমিশনে দ্বারস্থ হন তাঁরা। চেয়ারম্যান জানান, পুলিশ কমিশনারকে খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলবেন।
জলপাইগুড়ির বিউটি সরকারের অভিযোগ, তাঁর স্বামী গ্যাস সরবরাহের গাড়ি চালাতেন। ২০১১ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে নিঁখোজ। পুলিশে বারবার অভিযোগ জানিয়েছেন। অথচ কাজ হয়নি। কমিশনের তরফে এ দিন জানানো হয়, তারা বিষয়টি দেখবেন। উচ্চ আদালতে এ ব্যাপারে আবেদনের কথা বলেন। প্রধাননগরে মেনকাদেবীর অভিযোগ, তার বড় ভাই নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন। কখনও বিদুতের লাইন কেটে দেওয়া হচ্ছে। কখনও গালিগালাজ করছে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় তিনি জানিয়েছেন। তাঁরাও চেষ্টা করে। শেষে পুলিশেও অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মহিলাকে আদালতে বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেয় কমিশন।
ভক্তিনগরের শ্রীনগর কলোনির বাসিন্দা অজিত সরকারের অভিযোগ, এলাকার কিছু ছেলে ছোকরা তাঁর ছেলেকে ডেকে নিয়েগিয়েছিল। পরে তাঁর ছেলে বাইক দুর্ঘটনায় মেডিক্যালে ভর্তি বলে জানায়। তিনি গিয়ে দেখেন ছেলে মারা গিয়েছে। এর পরেই যারা ছেলেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানান। অজিতবাবুর অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। বাইক দুর্ঘটনার কথা বানানো গল্প। ১৫ জুন ওই ঘটনার পরে আজ পর্যন্ত পুলিশে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।
বিজয়নগর চা বাগানের বাসিন্দা মুন্নি লাকড়ার অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে বেশি টাকার কাজের টোপ দিয়ে ভিন্ রাজ্যে নিয়ে যায় এক পরিচিত লোক। পরে তিনি তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। সেই সময়ে মৃতদেহ আনতে ৩২ হাজার টাকা দাবি করেছিল অভিযুক্তরা। কী ভাবে তাঁর স্বামী মারা গেলেন তা জানতে পুলিশে কাছে অভিযোগ করা হলেও কোনও কাজ হয়নি। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের কাছে এই ব্যাপারে বিশদ রিপোর্ট চাওয়া হবে বলে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে। |