ছন্দে ফিরছে দার্জিলিং
হিংসা-মদতে দুই ব্যবসায়ী ধৃত পাহাড়ে
গোর্খাল্যান্ড জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি বনধ প্রত্যাহার করায় ফের ছন্দে ফিরল দার্জিলিং পাহাড়। কিন্তু, বুধবার ভোরে দার্জিলিং পাহাড়ের ব্যবসায়ী সংগঠনের এক কর্তাকে মোর্চার নানা হিংসাত্মক ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করায় আচমকা দোকানপাট সব বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর পর্যন্ত আলোচনার পরে ব্যবসায়ীরা আন্দোলন তুলে নিলে ফের দোকানপাট খোলে। বিকেলে ফের আরেক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃত দুই ব্যবসায়ীর নাম ব্রিজমোহন গর্গ ও হিমাংশু গর্গ। ব্রিজমোহনবাবু দার্জিলিং চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি। হিমাংশুবাবু ওই সংগঠনের অন্যতম মুখপাত্র। পুলিশ সূত্রের অভিযোগ, সম্প্রতি মোর্চার একাংশ রংলি-রংলিয়ত থানায় হামলা, তাকদা বাংলোয় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ওই ব্যবসায়ীর মদত রয়েছে। ধৃতকে আদালতে হাজির করানো হলে জামিনের আর্জি নাকচ হয়। বৃহস্পতি বার ফের শুনানি হওয়ার কথা।
দার্জিলিঙে ধৃত ব্যবসায়ী ব্রিজমোহন গর্গ। বুধবারের নিজস্ব চিত্র।
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গও। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যে ভাবে রাজ্য সরকার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছে তাতে আমি ব্যথিত! নিরীহ মানুষকে হেনস্থা করার তীব্র নিন্দা করছি। আমি পাহাড়ের মানুষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।’ সরাসরি ব্রিজমোহনবাবুকে গ্রেফতার করা নিয়ে মন্তব্য মোর্চা সভাপতি করেননি। দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্রিজমোহনবাবুর গ্রেফতার করাই শুধু নয়, খোদ বিমল গুরুঙ্গকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে কার্শিয়াঙে নানা পোস্টার পড়ায় অস্বস্তিতে মোর্চার অনেক নেতাই। কারণ, কার্শিয়াং ও দার্জিলিঙের কয়েকটি এলাকায় সরকারি কর্মীরা বন্ধ চালিয়ে যাওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন। শেষ পর্যন্ত মোর্চা নেতারা গিয়ে বুঝিয়ে তাঁদের নিরস্ত করেন। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “এভাবে নিরীহদের হেনস্থা করে পুলিশ ঠিক করছে না। মানুষ প্রতিবাদে সরব হবেন।” পাশাপাশি, তাঁদের সভাপতির বিরুদ্ধে পোস্টার পরা নিয়ে রোশন গিরির প্রতিক্রিয়া, “বনধ ২০ অক্টোবর পর্যন্ত শিথিল। এর বেশি বলছি না।”
রাজ্যের তরফে অবশ্য স্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ-প্রশাসন কাজ করছে বলে দাবি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “এটা একেবারেই পুলিশ-প্রশাসনের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। নির্দিষ্ট তথ্য, অভিযোগ ছাড়া নিশ্চয়ই পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। কাজেই আগ বাড়িয়ে কারও মন্তব্য করা ঠিক নয়।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিজমোহনবাবু দার্জিলিং পাহাড়ের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। শিলিগুড়ির খালপাড়া, সেবক রোডের ব্যবসায়ীদের একাংশের সঙ্গে ব্রিজমোহনবাবুর যোগাযোগের বিষয়টিও প্রশাসনের অজানা নয়। এমনকী, পুলিশ-প্রশাসনের একাধিক বড় মাপের অফিসারের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও ব্রিজমোহনবাবুর রয়েছে বলে মহাকরণে খবর পৌঁছেছে। পাহাড়ের রেশন ব্যবস্থার অন্যতম ডিস্ট্রিবিউটর ও একটি শপিং মলের মালিক ব্রিজমোহনবাবুর বিরুদ্ধে অতীতে জিএনএলএফকে আন্দোলনের সময়ে সাহায্য করার অভিযোগ ওঠে।
সম্প্রতি মোর্চাকে নানা ভাবে তিনি মদত দিয়েছেন বলে মহাকরণে অভিযোগ পৌঁছয়। তাঁকে ধরা নিয়ে টালবাহানা চলায় মহাকরণের একাধিক শীর্ষ কর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সরকারি সূত্রের খবর, ব্রিজমোহনবাবু কলকাতায় গিয়ে রাজ্য প্রশাসনের একাধিক কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি যে ‘নির্দোষ’ তা বোঝানোর চেষ্টা করেন। সে সময়ে তাঁকে আত্মসমর্পণের পরামর্শও দেওয়া হয় বলে সরকারি সূত্রেই জানা গিয়েছে। পাহাড়ে অশান্তি ছড়াতে সক্রিয় শক্তিগুলিতে মদত দিতে শিলিগুড়ির সেবক রোডের এক প্রোমোটারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় পুলিশ তদন্তে নেমেছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.