বিবিধ ‘অভিজ্ঞতা’র সিঁড়ি বেয়ে তিনি সভাধিপতির চেয়ারে আসীন হলেন।
যাঁর নামে দু’টি খুন ও জেলাশাসকের বাংলোয় হামলা চালানোর মতো ফৌজদারি মামলাও রয়েছে। তবু তাঁকেই মুর্শিদাবাদ জেলা সভাধিপতি হিসেবে বেছে নিতে হল!
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ছাড়া বিশেষ উপায় ছিল না। কারণ, ওই আসনটি সংরক্ষিত। এবং কংগ্রেসের বিজয়ী সদস্যদের মধ্যে তফসিলি জাতিভূক্ত ৬ সদস্যের মধ্যে তিনিই ‘যোগ্যতম’। তবে দলেরই অন্য একটি অংশের মত, সংরক্ষণের গেরোয় না পড়লেও সভাপতি হিসেবে তাঁকেই বেছে নিতে হত। যোগ্যতার বিচারে তিনিই ‘সেরা’ বাজি মনে করছেন তাঁরা।
মুর্শিদাবাদের ৭০টি আসনের মধ্যে ৪২টিতে জয়ী হয়ে জেলাপরিষদ দখল করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু সভাধিপতি পদটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। ৪২ জন সদস্যের মধ্যে ৩ মহিলা এবং ৩ পুরুষ সদস্য তফসিলি জাতিভূক্ত। সভাধিপতি নির্বাচনের জন্য জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ওই ৬ জনের কাছে জীবনপঞ্জি চাওয়া হয়। জীবনপঞ্জিতে মূলত জোর দেওয়া হয় তিনটি বিষয়ের উপর। |
শিক্ষাগত যোগ্যতা। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অশোক দাস বলেন, “তিনটি মানদণ্ডের নিরিখেই শিলাদিত্যের স্থান সবার উপরে। ৬ জনের মধ্যে বিজ্ঞানে স্নাতক শিলাদিত্য দেড় দশক ধরে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে জনপ্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাঁকেই সভাধপতির পদের যোগ্যতম মনে করেছেন জেলা সভাপতি অধীর চৌধুরী।”
স্কুল শিক্ষকের ছেলে শিলাদিত্য বরাবর কংগ্রেসের ‘হোলটাইমার’। ছাত্রপরিষদের দখলে থাকা কলেজের ছাত্রসংসদের শ্রেণি প্রতিনিধি হিসাবে সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ। সর্বোপরি দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বরাবরই ভাল।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের বাংলোয় ‘হামলা’ চালানোর অভিযোগ হয়। অভিযুক্ত হন দশ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শিলাদিত্যও। ২০০৯ সালের ১৮ মার্চ গোপাল মণ্ডল এবং তার দিন কয়েক পরে এক্রামুল শেখ খুন হন। তাঁরা দু’ জনেই বহরমপুর শহর লাগোয়া সিপিএমের পৃথক দু’টি লোকাল কমিটির সদস্য। ওই দু’টি খুনের মামলাতেও শিলাদিত্য অন্যতম অভিযুক্ত। এ ব্যাপারে অধীরের ব্যাখ্যা, “একই সঙ্গে কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক আর ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার পরীক্ষিত শিলাদিত্য। এমন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে সে, সিপিএমের আমলই হোক বা তৃণমূলের, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে না তা কখনো হয়। শিলাদিত্য আজ পর্যন্ত একটা ব্যাঙও মারতে পারেনি। চড়া গলায় কথা বলতে পারে না। সেই কিনা মানুষ খুন করবে!”
|