|
|
|
|
নতুন করে মৎস্যচাষে প্রশিক্ষণও |
ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীদের হাঁড়ি, জাল, মাছের চারা |
অভিজিৎ চক্রবর্তী • ঘাটাল |
ধান, সব্জি ও ফুল চাষিদের মতো এ বার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীদেরও ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার। বন্যার জলে যাঁদের দিঘি, পুকুরের মাছ ভেসে গিয়েছিল, তাঁদের প্রাথমিক একটি তালিকা তৈরি করেছে মৎস্য দফতর। কাল কোলাঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাথমিক ভাবে দুই মেদিনীপুরের ১৫০ জন মাছ চাষির হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেবেন।
ক্ষতি পূরণ হবে কী ভাবে?
মৎস্য দফতর ও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতি চাষিকে দু’কিলোগ্রাম করে মাছের চারা, সঙ্গে ৩০ কিলোগ্রাম চুন ও ২০০ কিলোগ্রাম মাছের খাবার দেওয়া হবে। তার সঙ্গে একটি হাঁড়ি ও জালও বিলি করা হবে। এক থেকে দেড় বিঘা জলাশয়ে এই দু’কিলো মাছের চারাতে মাছ চাষ করা যাবে। প্রয়োজন হলে চাষিরা বন্যার পর নতুন করে মাছ চাষ করতে কী করণীয়তা জানার জন্য প্রতি ব্লকে মৎস্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আগ্রহী চাষিদের সে বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। মৎস্য দফতরের উপ-মৎস্য অধিকর্তা (পশ্চিমাঞ্চল) উৎপল সর বলেন, “এখন জোরকদমে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। প্রাথমিক ভাবে দুই জেলার ১৫০ জন মৎস্যজীবীর হাতে মুখ্যমন্ত্রী ওই ক্ষতিপূরণ তুলে দেবেন। বাকিদের চলতি মাসেই প্রতি ব্লক থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
নাগাড়ে বৃষ্টির সঙ্গে জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে গত মাসে দুই জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছিল। এখনও ঘাটাল মহকুমায় বহু এলাকা থেকে জল সরেনি। বন্যার জলে পুকুর ও দিঘি থেকে মাছ ভেসে অন্যত্র চলে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েন বহু মৎস্যজীবী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার-সহ কৃষি দফতরের অধিকর্তারা প্লাবিত এলাকা ঘোরার সময় বিষয়টি লক্ষ করেন।
মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ঘাটাল, মেদিনীপুর সদর, ঝাড়গ্রামের একাংশ এবং পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও এগরা মহকুমার একটি অংশেই মূলত মাছ চাষে ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, দুই জেলা মিলিয়ে প্রায় পাঁচশো মাছ চাষির ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে মৎস্য চাষ হয় প্রায় ২৯ হাজার হেক্টর জলাশয়ে। এর মধ্যে ৪২২৬ হেক্টর জলাশয়ের মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিমে ২৩ হাজার হেক্টরের মধ্যে ৬১৯৭ হেক্টর জলাশয়ের মাছচাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১২ কোটি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ৯ কোটি ২৩ লক্ষ টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। মূলত মৃগেল, রুই, ছোট চারা পোনা জাতীয় মাছেরই বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও চিংড়ি-সহ অন্যান্য মাছেরও ক্ষতি হয়েছে। ঘাটালের মাছ চাষি অমরেন্দ্র বেরা, চন্দ্রকোনার অনুপ মালাকার বলেন, “ক্ষতিপূরণ পাওয়ায় আমরা খুশি। একটু পরিশ্রম করলে আর তিন-চার মাস পরেই ক্ষতি কমিয়ে আনা যাবে।” |
|
|
|
|
|