গোড়াতেই বাঁ-হাতের কনুই দিয়ে চোয়ালে সজোরে মার। গোটা ম্যাচ জুড়েই চোরা গোপ্তা ঘুষি-লাথিতেও ঠিক বাগে আনা যাচ্ছিল না। তাই মাঝে মধ্যেই কড়া ট্যাকল। তবু নেইমারকে আটকানো গেল কোথায়! যত না মার খেলেন তার দশ গুণ জ্বলে উঠে ‘ব্রাজিলের বোমা’ একাই ছিন্ন ভিন্ন করে দিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোহীন পর্তুগালকে।
দুরন্ত গোল করে আর সতীর্থদের জন্য দু’গোল সাজিয়ে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে সাও পাওলোর ‘ওয়ান্ডার কিড’ ৩-১ জেতালেন টিমকে। লুই ফিলিপ স্কোলারির টিমের প্রাণভোমরা সঙ্গে নিজস্ব স্টাইলে সতর্ক করে রাখলেন, “ব্যাড ট্যাকলগুলো আসলে গুডই। আমাকে আর আমার টিমকে মোটিভেট করতে দারুণ কাজ দেয়। আমাদের মারলে এ রকমই হবে।” |
মঙ্গলবার জিলেট স্টেডিয়ামে ‘নট সো ফ্রেন্ডলি’ আবহাওয়ায় রোনাল্ডো ছাড়াই মাঠে নামার দুর্বলতা ঢাকতে পাওলো বেন্টোর টিমের ভরসা ছিল ‘টাফ গেম’। আগামী বছর নেইমারদের দেশে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে ঠিক এমন পরিবেশই চাইছিলেন ব্রাজিল কোচ। না হলে ‘বিগ ফিল’ বলবেন কেন, “ম্যাচটা বিশ্বকাপের মতোই”।
কঠিন পরিবেশই ব্রাজিলের জন্য আরও কঠিন হয়ে যায় ম্যাচের ১৮ মিনিটে পর্তুগাল এগিয়ে গেলে। লিভারপুল আর চেলসিতে খেলা রাউল মেইরিলেসের পায়ে মাইকন ভুল করে বল বাড়িয়ে দিলে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন তিনি। পর্তুগিজ ক্যাপ্টেন ব্রুনো আলভেজ এর পরই বাঁ-হাতের কনুই দিয়ে নেইমারকে মেরে ভুলটা করে বসেন। সলতেয় আগুনটা তিনিই ধরান। জ্বলে ওঠেন নেইমার। ২৪ মিনিটে তাঁর দুরন্ত বাঁকানো কর্নার থেকে থিয়াগো সিলভার বুলেট হেডার সমতায় ফেরায় ব্রাজিলকে। ছ’মিনিট পর ২০১৪ বিশ্বকাপের ‘পোস্টার বয়’ পাঁচ ডিফেন্ডারের চক্রব্যুহ ভেদ করে মসৃণ গতিতে গোল করে টিমকে এগিয়ে দেন। |
পর্তুগাল ডিফেন্ডারদের নেইমারদের গতি রোধ করা সম্ভব ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধেও না। যার ফলশ্রুতি ম্যাচের ৪৯ মিনিটে ব্রাজিলের তৃতীয় গোল। নেইমারই অনুঘটকের কাজটা করেন আবার। বাঁ-দিকে ম্যাক্সওয়েলকে ফাঁকায় বল বাড়িয়ে দেন তিনি। ব্রাজিলের ফুল ব্যাক পর্তুগালের বক্সে পাস বাড়ান জো-র উদ্দেশে। কিছু দিন আগেই অস্ট্রেলিয়াকে ৬-০ ধ্বংস করার ম্যাচে জোড়া গোল করা জো ছোট্ট টোকায় পর্তুগালের কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দেন। নেইমারও বোধহয় এ রকম কঠিন পরিবেশই চাইছিলেন। ম্যাচ শেষে অবশ্য তিনি বলেন, “একটু ব্যথা রয়েছে। তবে সেটা বড় কথা নয়। আমি ভিডিওতে দেখেছি প্লেয়াররা কী ভাবে আমার উদ্দেশে তীর্যক মন্তব্য করছিল। থিয়াগোকেও দেখিয়েছি। সাধারণত আমি কোনও প্ররোচনায় পা দিই না। তবে ম্যাচটা ভাল হয়েছে। ব্রাজিল-পর্তুগাল ম্যাচ সব সময়ই একটা শো। পর্তুগাল স্ট্রং টিম। ওরা হার্ডই খেলে।” আর বিগ ফিল কে ম্যাচের সেরাকে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলে দেন, “এটাই নেইমারের স্বাভাবিক খেলা।” |