সিঁথি থেকে টালিগঞ্জ বড় রাস্তায় পার্কিং বন্ধ করা হবে বলেই পরে তার ব্যাখ্যা বদলালেন পরিবহণমন্ত্রী।
বুধবার মহাকরণে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র প্রথমে বলেন, “সিঁথি থেকে টালিগঞ্জ, কলকাতার মূল রাস্তা এবং সংযোগকারী রাস্তার দু’ধারে পার্কিংয়ের অনুমতি দেওয়া হবে না। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হলেও নিত্যযাত্রীদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” কিন্তু পরে মন্ত্রী বলেন, “সরকার একা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এমনিতে এখন কলকাতার অনেক রাস্তাই নো-পার্কিং এলাকা। অন্য যে সব রাস্তা নো-পার্কিং করা প্রয়োজন, সেগুলি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে আলোচনার পরেই সিদ্ধান্ত হবে।”
পরিবহণমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে রীতিমতো অস্বস্তিতে পুর-প্রশাসন। শহরের রাস্তায় পার্কিং দেওয়ার দায়িত্বে পুরসভা। রীতিমতো টেন্ডার দিয়ে রাস্তায় পার্কিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঠিকাদারদের। পুরসভার পার্কিং দফতরের এক অফিসারের কথায়, “এ ধরনের বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। রাস্তায় গাড়ি পার্কিং তুলে দিতে চাইলে এত গাড়ি থাকবে কোথায়! হাট-বাজার, রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, কলেজ, আদালত, অফিস সবের জন্যই গাড়ি লাগে।” তিনি জানান, কলকাতায় একমাত্র চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে পার্কিং নেই। আর টালার দিক থেকে টালিগঞ্জমুখী এপিসি রোড, এ জে সি বসু রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, হরিশ মুখার্জি রোড-সহ একাধিক বড় রাস্তায় পুরসভা অনুমোদিত পার্কিং জোন রয়েছে। যদিও আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোড ও শরৎ বসু রোড থেকে পার্কিং তুলে নেওয়া হয়েছে।
তবে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোড নো-পার্কিং এলাকা হলেও ওই রাস্তায় যদুবাবুর বাজার সংলগ্ন এলাকা-সহ আরও কয়েকটি জায়গায় এখনও ট্যাক্সি ও অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকে বলে জানালেন পুরসভার একাধিক অফিসার। তাঁদের কথায়, মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ইউনিয়নের সদস্যেরাই সেখানে ট্যাক্সি রাখেন। এ ছাড়াও শহরের বেশির ভাগ রাস্তা দখল করে রাখেন ট্যাক্সি ও অটোচালকেরা। রাস্তা থেকে আগে সেই সব যানবাহন সরানো দরকার। ব্যস্ত সময়ে শহরে যানবাহনের গতি রুদ্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ মাঝপথে ট্যাক্সি ও অটো দাঁড়িয়ে থাকা। মন্ত্রী অবশ্য যদুবাবুর বাজারের রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “সন্ধ্যা ছ’টার পরে ওখানে নিয়ম কিছুটা শিথিল হয়। তার পরে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। কিন্তু সারা দিনে ওখানে ট্যাক্সি, অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে থাকে না।”
পুরসভার এক অফিসারের কথায়, “শহরের বেশ কিছু রাস্তায় পার্কিং এলাকা নেই। অথচ, দীর্ঘকাল ধরে সে সব এলাকায় গাড়ি রাখছেন মানুষ। এর জন্য তাঁরা পয়সাও দিচ্ছেন, তবে তা পুরসভার ভাঁড়ারে জমা পড়ছে না। অন্য কারও পকেট ভরাচ্ছে।”
মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরসভার মেয়র পারিষদ (পার্কিং) দেবাশিস কুমার বলেন, “মদনবাবু কী বলেছেন, জানি না। ওঁর সঙ্গে কথা বলব।” পার্কিং বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অফিসার বলেন, “সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তেমনটা হলে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে হবে।” |