হাইকোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত বাসুদেবপুর-জেমারি পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধান কাজ শুরু করতে পারবেন না বলে জানাল সালানপুর ব্লক প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১ অক্টোবর গোটা বিষয়টি হাইকোর্টকে লিখিত ভাবে জানাতে বলা হয়েছে। বিডিও প্রশান্ত মাইতি বলেন, “হাইকোর্ট এখনই কোনও পদে ক্ষপ করতে নিষেধ করেছে। আদালত যেমন নির্দেশ দেবে সে ভাবেই কাজ করা হবে।”
প্রধান-উপপ্রধানকে কাজ শুরু করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল। আগামী সপ্তাহ থেকে ব্লক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভও করা হবে বলে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে।
শুরু থেকেই বাসুদেবপুর-জেমারি পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অচলাবস্থা তৈরি হয়। ১০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল এবং সিপিএম পাঁচটি করে আসন দখল করে। ১৬ অগস্ট প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের জন্য বৈঠক ডাকে ব্লক প্রশাসন। প্রধানের পদটি তফসিলি জাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, তৃণমূল ও সিপিএমদু’দলের প্রার্থীকে তফসিলি শংসাপত্র দেখাতে বলেন যুগ্ম বিডিও জয়ন্ত চৌধুরী। সিপিএমের প্রার্থী তা দেখান। কিন্তু তৃণমূলের প্রার্থী সেটি বাড়িতে ফেলে এসেছেন বলে জানান। তাঁকে বাড়ি থেকে সেটি আনতে বলা হলে নির্দিষ্ট সময়ে তিনি এসে পৌঁছতে পারেননি। তাই সিপিএম প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। প্রতিবাদে তৃণমূলের লোকজন প্রায় সাত ঘণ্টা বিডিও এবং যুগ্ম বিডিও-কে ঘেরাও করে রাখেন। পরে ওই নির্বাচন প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়।
ব্লক প্রসাশনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হাইকোর্টে মামলা করে সিপিএম। কিন্তু ৩ সেপ্টেম্বর ফের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের বৈঠক ডাকেন বিডিও। সিপিএম তাতে যোগ দেয়নি। তৃণমূলের পাঁচ সদস্য উপস্থিত হন। তাঁদের মধ্যে থেকেই প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন করা হয়। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পর দিনই হাইকোর্টের নিদের্শ হাতে পান বিডিও। তাতে বলা হয়, কোর্ট পরবর্তী সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না ব্লক প্রশাসন। আদালত হস্তক্ষেপ করায় প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচনের পরেও তাঁদের কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে বিডিও জানান।
এ নিয়েই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। সোমবার তৃণমূলের তরফে একটি চিঠি দিয়ে বিডিও-কে জানানো হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরুর অনুমতি না দিলে বিক্ষোভ শুরু করা হবে। ব্লক তৃণমূল সভাপতি ধরম কর্মকারের বক্তব্য, “কোর্টের নিষেধাজ্ঞা আসার আগেই প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন হ য়েছে। তা হলে তাঁদের কাজ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না কেন?” এই দাবিতে হাইকোর্টে তাঁরাও পাল্টা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান তৃণমূলের ওই এলাকার নির্বাচনী পর্যক্ষেক পাপ্পু উপাধ্যায়। তাঁর দাবি, সামনেই পুজো। আগে এলাকায় নানা উন্নয়নের কাজ করতে হয়। কিন্তু পঞ্চায়েতে ডামাডোলে এলাকার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।
আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করা হবে। সেই নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হবে। |