তরুণী বধূর আত্মহত্যা মামলায় এ বার জড়াল অভিযুক্ত সোমেশ ঘোষের বাড়ির আরও ৫ জনের নাম। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়ে নতুন করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণীর মা। তাঁর অভিযোগ, সোমেশবাবু তাঁর মেয়েকে একাধিকবার যৌন হেনস্থার চেষ্টা করেন। এ দিন দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের পক্ষ থেকেও তদন্তে গাফিলতি হচ্ছে অভিযোগ করে একটি চিঠি দেওয়া হয় পুূলিশ কমিশনারকে।
কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন সব পক্ষের বক্তব্য শুনে দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন। মূল অভিযুক্ত সোমেশবাবুর শাশুড়ি পারুল ঘোষ তাঁদের ফাঁসানোর চক্রান্ত বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন। পুলিশ কমিশনার বলেন, “তদন্ত সঠিক পথেই চলছে। মূল অভিযুক্ত পলাতক। তাঁকে পেলেই গ্রেফতার করা হবে।” এ দিন নতুন করে অভিযোগের ভিত্তিতেও তদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ দিন মৃত তরুণী বধূর জামাইবাবু বলেন, “আমরা কয়েকটি বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছি। তাঁর মধ্যে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ধারায় এখনও কেন মামলা দায়ের করা হয়নি তা নিয়ে জানতে চেয়েছি। সেই সঙ্গে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে পরে আমরা সুইসাইড নোট ভালভাবে পড়ে জানতে পেরেছি। সেই বিষয়টিও কমিশনারকে জানিয়েছি। উনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।”
মৃতার পরিবারের সমস্ত অভিযোগই মিথ্যে বলে দাবি করেন সোমেশের শাশুড়ি পারুলদেবী। তিনি অভিযোগ করেন, “আমাদের ফাঁসানোর জন্য এই চক্রান্ত করছে মৃতা বধূর পরিবার। ওই বধূ তাঁর স্বামীর অত্যাচারের কারণেই মারা গিয়েছেন।” যদিও অভিযোগ একেবারেই মানতে চাননি মৃতার স্বামী। তিনি বলেন, “তা হলে আমার নাম সুইসাইড নোটে লিখল না কেন?” যদিও সুইসাইড নোটের হাতের লেখা মৃতারই কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পারুলদেবী। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, তদন্তের স্বার্থে মৃতার হাতের লেখার পুরানো নমুনা সংগ্রহ করে বিশেষজ্ঞ দিয়ে মিলিয়ে দেখা হবে। দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, “পুলিশ তদন্তে গাফিলতি করছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল। আমি কমিশনারকে অনুরোধ করেছি, যত শীঘ্র সম্ভব মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।”
গত ৩১ অগস্ট রাতে বাবার বাড়ির বন্ধ ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই বধূকে। তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি ১৩ পৃষ্ঠার ‘সুইসাইড নোট’। তাতে যে আর্ট স্কুলে তিনি কাজ করতেন সেই স্কুলের কর্ণধার সোমেশ ঘোষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ডেকে নিয়ে গিয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগও সোমেশবাবুর বিরুদ্ধে রয়েছে। এর পরেই ঘটনার তদন্তে নেমে অভিযুক্তের বাবা তুষারকান্তিবাবুকে পুলিশ ধরে।
|