মেয়রের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে তাঁর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন পূর্ত এবং ক্রীড়া বিভাগের মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক। সোমবার রাতেই তিনি মেয়রকে ওই চিঠি দেন। তবে মেয়র এখনও তা গ্রহণ করেননি বলে জানা গিয়েছে। মেয়রের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরেই এই ঘটনা বলে কংগ্রেসের একটি সূত্র জানিয়েছে। কংগ্রেসের একটি মহলের তরফে সুজয়বাবুকে বোঝানোর চেষ্টা করাও হচ্ছে। তবে সুজয়বাবুর কথায়, “মেয়র পারিষদের পদে থাকার চেয়ে দলকে চাঙ্গা করা এখন বিশেষ জরুরি। সে দিকে মন দিতে চাই। এসজেডিএ এর দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলনে নামতে চাই। দলের হয়ে আরও কাজ করার জন্যই ইস্তফা দিতে চেয়েছি।” গঙ্গোত্রীদেবী বলেন, “তেমন কিছু ঘটেনি।” সুজয়বাবুর ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি মেয়র।
মেয়র কী সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা নিয়ে অবশ্য ভাবতে রাজি নন সুজয়বাবু। তবে তিনি পূর্ত দফতরের পদে থাকতে চান না বলে জানিয়েছেন। দলেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই কোন বোর্ড মিটিং ছাড়াই মেয়র ১১ টি প্ল্যান অনুমোদন করার বিষয়টিও তিনি মেনে নিতে পারেননি। সেই সময়ও শহরের বাইরে ছিলেন সুজয়বাবু। সম্প্রতি বকেয়া পাওনার দাবিতে আন্দোলনে নামে ঠিকাদার সংস্থার। তারা শহরের রাস্তার কাজও বন্ধ করে দেন। এর পরেই ঠিকাদারদের বকেয়া টাকা দেওয়ার জন্য সমস্ত নথিপত্র জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন পুর কমিশনার। কার কত টাকা বাকি রয়েছে, তাঁরা কে কী কাজ করেছেন তার বিস্তারিত তথ্য চেয়ে ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। অথচ ঠিকাদাররা নথি জমা দেওয়ার আগেই মেয়রের নির্দেশে তাদের একাংশ টাকা দিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘনিষ্ঠ মহলে জানা গিয়েছে, কেন এ ভাবে টাকা দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুজয়বাবু। তাঁর দফতরের ব্যাপারে তাঁকে না জানিয়ে টাকা দিয়ে দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি তিনি। ডেপুটি মেয়র সবিতা অগ্রবাল বলেন, “ঠিকাদাররা অফিসের সামনে লাগাতার আন্দোলন করেছেন। বস্তি উন্নয়নের টাকা একাংশ তাদের দেওয়া হয়েছে।”
অন্যদিকে নান্টু পাল চেয়ারম্যান থাকার সময় মঙ্গলবার যে মুলতুবি বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছিল তা বাতিল করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধানকে চিঠি দেন। কোন আইনে মুলতুবি বোর্ড মিটিং বাতিল করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “সোমবার রাতে একটি চিঠি মারফত জানতে পারি যে মুলতুবি সভা বাতিল হয়েছে। কী কারণে ওই সভা বাতিল করা হল তার উল্লেখ নেই। এভাবে কোন বোর্ড মিটিং বাতিল করা যায় না।” সমস্ত বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হবে বলে কৃষ্ণবাবু জানিয়েছেন। মেয়রের দাবি, “নিয়ম মেনেই সব করেছি।” |