সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে রিসর্টে নিয়ে গিয়ে মাদক মেশানো বিয়ার খাইয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। কুমারগ্রাম থানার বারবিশা এলাকায় রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, রবিবার সকাল এবং রাতে দু’দফায় গণ ধর্ষণের করা হয় তাকে।
সোমবার সকালে ছাত্রীটি পালাতে সক্ষম হয়। এর পরেই কিশোরীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবেশী এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতেই ওই স্কুল ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ছাত্রীর মা ও বাবা বলেন, “সামান্য জমি চাষ করে আমাদের সংসার চলে। যারা আমার মেয়ের এমন সর্বনাশ করলো তাদের শাস্তি চাই।”
পুলিশ জানিয়েছে ধৃত মহিলার নাম আবে বিবি ওরফে পিঙ্কি। অভিযোগ, গত শনিবার পিঙ্কি নামে ওই মহিলা এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ছাত্রীটিকে যশোডাঙ্গা এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকেই গত রবিবার সকালে কিশোরী ছাত্রীটিকে বারবিশার ওই রিসর্টে নিয়ে যান ওই অভিযুক্ত মহিলা। তাকে একটি হোটেলেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে। রবিবার রাতেও তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ।
বারবিশার যে রিসর্টে ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেটির লাইসেন্স বাতিল করার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে জেলা পুলিশের থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। রিসর্টের ম্যানেজার এবং কর্মীদের জেরা করেছে পুলিশ। হোটেলের কর্মীদেরও জেরা করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই রিসর্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রিসর্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃত মহিলার থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার সকালে আকবর আলি নামে এক যুবকের বাইকে করে পিঙ্কি ওই ছাত্রীকে রিসর্টে নিয়ে যান। অভিযোগ, রিসর্টের ঘরে ঢুকিয়ে তাঁকে জোর করে মাদক মেশানো বিয়ার খাইয়ে ছয় জন যুবক মিলে ধর্ষণ করে। সোমবার সকালে পালিয়ে একটি টেলিফোন বুথ থেকে বাড়ির লোককে ফোন করে খবর দেয় ওই ছাত্রী। পরিবারের সদস্যরাই তাকে উদ্ধার করে। বারবিশার ওই রিসোর্টের ম্যানেজার দীপক মিত্র অবশ্য দাবি করে বলেন, “আমাদের রিসর্টে এ ধরণের কোনও ঘটনা ঘটেনি। চক্রান্ত করে আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে। তদন্ত হলেই সব পরিষ্কার হবে।”
ধৃত মহিলা আবে বিবির দাবি, “ওই স্কুল ছাত্রীকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। ওই কিশোরী স্বেচ্ছায় আকবর নামে এক যুবকের সঙ্গে যায়। এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।” পুলিশ জানিয়েছে, আকবর আলি নামে যুবকের বাড়ি অসমের তামারহাটে বলে জানা গিয়েছে।
বাকি অভিযুক্তরা অসমের বাসিন্দা বলে পুলিশের সন্দেহ। অভিযুক্তদের খোঁজ পেতে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “রিসর্ট এবং অভিযুক্ত হোটেল কর্মীদের জেরা করা হচ্ছে। বুকিং রেজিস্ট্রারও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |