মঙ্গলবার শপথ নিয়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ‘সমন্বয়ের’ কথা বললেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের বামফ্রন্ট সভাধিপতি নুরজাহান বেগম। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে একমাত্র জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদেই নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছে বামফ্রন্ট। জেলা পরিষদে পূর্বতন বোর্ডের তরফে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘বঞ্চনা’ ও ‘অসহযোগিতার’ অভিযোগ তোলা হলেও এ দিন নয়া সভাধিপতির রাজ্য সরকারের সঙ্গে ‘সমন্বয়ের’ বার্তাকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। এক সময়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন নুরজাহান বেগম। ধূপগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষও ছিলেন তিনি। সিপিএমের ধূপগুড়ি জোনাল কমিটির সদস্য তথা সভাধিপতি বলেন, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস রাজ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের কোনও কাজে বাধা তৈরি করবে না। পরিকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে গ্রাম উন্নয়ন প্রকল্পে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করেই কাজ করতে চাই। দলমত নির্বিশেষে জেলা পরিষদের সকল সদস্যদের সামিল করে উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” |
নতুন সভাধিপতির বক্তব্য স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক। তিনি বলেন, “উনি যদি নিরপেক্ষভাবে কাজ করেন, উন্নয়নের অগ্রাধিকার দেন তবে তৃণমূলও সভাধিপতির পাশে থাকবে। তৃণমূল এই নীতিতেই রাজ্য সরকার চালাচ্ছেন। কিন্তু যদি ফের আগেরম ত রং দেখে উন্নয়নের কাজ হয়, আমরাই রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ চাইব।”
জেলায় মহিলাদের উপর অত্যাচার বন্ধ করা নিয়েও জেলা পরিষদ উদ্যোগী হবে বলে এদিন সভাধিপতি জানান। মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি মজবুত করা, মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়াও তাঁর লক্ষ্য বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “রাজ্য তথা দেশজুড়ে মহিলাদের উপর যে অত্যাচার চলছে, তার বিরুদ্ধে জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে সর্বত্র সচেতনতা প্রসারের কাজ করা হবে। পাশাপাশি, জেলার পরিকাঠামো উন্নয়ন, ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের কাজকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।” জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি নির্বাচিত হয়েছেন আরএসপির জসিন্তা লাকড়া। এ দিন বোর্ড গঠনের সভায় কংগ্রেসের সদস্য তথা প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা মোহন শর্মা ছাড়া ৩৬ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। মোহনবাবু অসুস্থতায় আসতে পারেননি। জেলা পরিষদের ৩৭টি আসনের মধ্যে ২৭টি বামফ্রন্টের দখল করে। কংগ্রেস এবং তৃণমূল ৪টি করে আসন পায়। অন্যরা ২টি আসনে জেতে। রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালুর পরে জলপাইগুড়িতে শরিকি সমঝোতা করে ভোটে লড়ে বামফ্রন্ট। সেই জন্য জেলা পরিষদের কাজকর্ম নিয়েও নিয়মিত বামফ্রন্টের বৈঠক হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা বামফ্রন্ট। |