বাগানের মসৃণ জয়েও ভ্রুকুটি সেই রক্ষণ
মোহনবাগান: ৪ (সাবিথ-২, আদিল, মণীশ)
রেলওয়েএফসি: ১ (ওরোক)
‘ডায়মন্ডের বছর’ ফিরে এল নাকি? বাড়ি ফেরার পথে প্রশ্ন সাতানব্বইয়ের বাগান গোলমেশিন চিমা ওকোরির। গাড়িতে উঠে কালো চিতার সংযোজন, “কাতসুমিকে দেখলেন? ওডাফা টিমে ঢুকলে দেখবেন কী হয়!”
ওডাফার চোখও কাতসুমিকে দেখে চকচকে। ক্র্যাচ বগলে খেলা দেখতে আসা সবুজ-মেরুনের ‘কিং কোবরা’ বলছেন, “কাতসুমি বাগানের আশীর্বাদ।”
যা শুনে করিমের জাপানি মিডফিল্ডার সারল্য ভরা হাসি মুখে ঠিক সন্ধে সাতটাতেই বললেন, “আমি নই। সেরা সাবিথ। আর চিমা এ সব বলেছে? এই রে, দায়িত্ব বেড়ে গেল।” পরক্ষণেই কাতসুমির সোজা-সাপ্টা মন্তব্য, “ওডাফাই আসল লোক। আজ ও ছিল না। তাই সবাই বাড়তি লোড নিয়েছি। আই লিগে আমি বল বাড়াব। ও গোল করবে।”
ডায়মন্ডের মরসুমে অমল দত্তর ‘ম্যান ফ্রাইডে’ দেবজিৎ ঘোষের চোখ টেনেছে অবশ্য অন্য এক জন। ম্যাচ সেরা আদিল খান। দুই স্টপারের সামনে দেবজিতের মতোই ব্লকার হিসেবে খেলে প্রথম দিনেই মন জিতে নিলেন সবুজ-মেরুন জনতার। দেবজিৎ বলছেন, “বহু দিন পর এক জন ভাল ডিফেন্সিভ ব্লকার দেখলাম। ফিটনেসটা বাড়ালে জাতীয় দলে ডাক এল বলে।” কাতসুমি, আদিলদের মতোই মরসুমের প্রথম ম্যাচে ঝকঝকে সাবিথ, ওয়াহিদ, মণীশরাও।
দুরন্ত গোল করে নিজেই যেন অবাক আদিল। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
৪-৩-৩ ছকে এ দিন যুবভারতীতে প্রথম মিনিট থেকেই ঝড় তোলা শুরু সাবিথদের। বাবার নির্দেশ মতো মালয়ালি স্ট্রাইকার করলেন জোড়া গোল। ম্যাচের শুরুতেই দুরন্ত হেডে প্রথমটা। পরেরটা দ্বিতীয়ার্ধে শঙ্করের শট রেল গোলকিপারের হাতে লেগে ফেরার পথে নিখুঁত প্লেসিংয়ে। ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথে টানেলে আনন্দবাজারকে বললেন, “প্রথম গোলটাই সেরা। বাবাকে ওটার কথাই বলব।”
ডান পায়ের জোরালো ভলিতে কুড়ি গজ দূর থেকে আদিলের গোলটাও সমান দর্শনীয়। গোয়ান মিডফিল্ডারের জন্যই এ দিন সৌরেনের ৪-১-৪-১ ছক ঘেঁটে একসা। বল কাড়লেন। বল বাড়ালেন। আবার বিপক্ষ বক্সের আশেপাশে হানা দিয়ে গোলও করলেন বাগানের ‘ডেভিড লুইজ’ (ঝাঁকড়া চুলের জন্য এই নামেই তাঁকে ডাকা শুরু করেছে সবুজ-মেরুন গ্যালারি) আদিল। তবে মহেশ গাউলির ভক্তকে ফিটনেস বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে থ্রু পাস বাড়ানোর সময় ভুলভ্রান্তি কমাতে হবে। না হলে চাপ বাড়বে রক্ষণে। কারণ এ মরসুমেও বাগানের লেফট ব্যাক অন্যতম কমজোরি জায়গা। পরে এসে নিকোলাও এখনও দলের সঙ্গে মানাতে ব্যর্থ। দুই স্টপারের মধ্যেও ব্যবধান তৈরি হচ্ছে কখনও কখনও। করিমও মানছেন সে কথা। বলছেন, “এখনও অনেক খাটতে হবে। পুরো ছন্দ আসেনি।”
এ দিন প্রথমার্ধের শেষ কুড়ি মিনিট এই সুযোগেই চেপে ধরেছিল রেল। আইবরকে হাফ টার্নে ধোঁকা দিয়ে ওরোকের গোলটা তখনই। ব্যাক ফোরের সামনে ইফিয়ানিকে রেখে মাঝমাঠ আঁটোসাঁটো করে চাল দিয়েছিলেন সৌরেন। ধুরন্ধর করিম বেঞ্চারিফা তা বুঝতে পেরেই দ্বিতীয়ার্ধে উইং থেকে কাতসুমিকে সরিয়ে দুই স্ট্রাইকারের পিছনে আনলেন। মণীশ ভার্গব চলে এলেন সে জায়গায়। বাগান চলে গেল ৪-৩-১-২ ছকে। নিকোলাওকে তুলে স্টপারে নামালেন কিংশুককে। আইবর লেফট ব্যাক। কাতসুমি ডাউন দ্য মিডল হানা দিতেই লাইনচ্যুত রেল।
ততক্ষণে অবশ্য আদিলের থেকে বল পেয়ে ডান পায়ে ৩৫ গজের জোরালো ভলিতে বিশ্বমানের গোল করে ফেলেছেন মণীশ। হেলমেট না পরে বাইক চালানোর জন্য যিনি প্রায়ই স্নেহের বকা খান সহকারী কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এ দিন তার গোল দেখে করিম মাঠেই মণীশের পা ধরে প্রতীকী বুট পালিশ করে দিলেন। খেলা শেষে বলেও গেলেন, “এ রকম গোল রোজ করলে ওর জার্সিও কেচে দেব।”

মোহনবাগান: শিল্টন, ওয়াহিদ, রোয়িলসন, আইবর, নিকোলাও (কিংশুক), আদিল(রাজীব), ডেনসন, কাতসুমি, শঙ্কর (অ্যান্টনি), মণীশ, সাবিথ।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.