ছাত্রী নির্যাতনে অভিযুক্ত আরও এক অধ্যাপকের শাস্তি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শান্তিনিকেতন |
বিভাগের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত কলাভবনের ভাস্কর্য বিভাগের অধ্যাপক সুমিতাভ পালকে শাস্তি দিল বিশ্বভারতী। শ্রীনিকেতনে বদলি করা ছাড়াও তাঁর একটি ‘ইনক্রিমেন্ট’ও বন্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের নির্দেশে অভিযুক্ত অধ্যাপককে চিঠি দিয়ে এই শাস্তির কথা জানিয়েছেন কর্মসচিব। মঙ্গলবার উপাচার্য বলেন, “এই ধরনের অপরাধ অথবা আর্থিক দুর্নীতির মতো বিষয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই মেনে নেবেন না। এ ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি মেনে চলা হবে। প্রয়োজনে আরও কড়া হবে বিশ্বভারতী।”
২৩ জুলাই বিশ্বভারতীর ‘প্রিভেনশন অফ সেক্সচুয়াল হ্যারাসমেন্ট কমিটি অ্যাট ওয়ার্কপ্লেস’ কমিটির কাছে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন তাঁরই বিভাগের এক ছাত্রী। তদন্ত শুরু হয়। কমিটির কাছে ছাত্রী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ তুলে ধরেন। পরে কমিটি জিজ্ঞাসাবাদ করে সুমিতাভবাবুকেও। ছাত্রীর অভিযোগ ছিল, গত দু’বছর ধরে নানা অছিলায় ওই অধ্যাপক তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এমনকী, তিনি ছাত্রীটিকে নিজের বাড়িতে আসার জন্যও জোর করতেন। না এলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখাতেন বলে অভিযোগ। তবে এমন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন মাত্রা ছাড়ায় ওই অধ্যাপককে খানিকটা এড়িয়ে চলতে শুরু করেছিলেন ওই ছাত্রী। তাঁর দাবি, এই দূরত্বের কারণেই গত জুন মাস থেকে হুমকি দিতে শুরু করেন ওই অধ্যাপক। গভীর রাতে ওই ছাত্রীকে তিনি মোবাইলে ফোন করতেন এবং আপত্তিকর এসএমএসও পাঠাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এরপরেই ওই ছাত্রী বিশ্বভারতীর দ্বারস্থ হন।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিটি তদন্ত করে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাঁচাই করে কর্তৃপক্ষকে একটি রিপোর্ট দেয়। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বিশ্বভারতীর এক অধ্যাপককে দিয়ে ফের তদন্ত করানো হয়। তিনিই সুমিতাভবাবুর বিরুদ্ধে এই শাস্তির সুপারিশ করেন। এ দিকে নির্যাতিতা ছাত্রী ওই অধ্যাপকের শাস্তি মেলার প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে এ দিনও অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি সুমিতাভবাবু দাবি করেছেন, তিনি এখনও পর্যন্ত বিশ্বভারতীর থেকে কোনও চিঠি পাননি। যদিও কলাভবনের অধ্যক্ষ শিশির সাহানা বলেন, “ওই অধ্যাপকের শাস্তি সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। কিছু দিনের মধ্যেই শ্রীনিকেতনের শিল্প সদনে তিনি কাজে যোগ দেবেন।”
|