একশো দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় তিন কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে গোসাবার পাঠানখালি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আরএসপি-র পুরঞ্জয় খাঁড়াকে গ্রেফতার করল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা এসফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। রবিবার রাতে গোসাবা বাজার এলাকা থেকে ধরা হয় বছর পঁয়ত্রিশের পুরঞ্জয়বাবুকে। সোমবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে তিন দিন গোয়েন্দা-হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তাঁর পড়শিদের অনেকে মনে করছেন, পুরঞ্জয়বাবুকে ফাঁসানো হয়েছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০০৮ সালে ভোটে জিতে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হন পুরঞ্জয়বাবু। ২০১১ সালের শেষ দিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব পুরঞ্জয়বাবুর বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত পরিচালনায় নানা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। প্রশাসনের কাছে তাঁরা স্মারকলিপিও দেন। গত জানুয়ারি মাসে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের তরফে একটি পরিদর্শক দল ওই পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজ খতিয়ে দেখতে আসে। ওই দলের প্রতিনিধিরাই ওই প্রকল্পের হিসেবে দু’কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার টাকার গরমিল ধরেন। তাঁদের সুপারিশ অনুযায়ী জেলাশাসকের নির্দেশে গত এপ্রিলে গোসাবার বিডিও পুরঞ্জয়বাবুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সময়ে তিনি গা ঢাকা দেন বলে পুলিশ জানায়।
বিডিও সুমন চক্রবর্তী বলেন, “ওই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।” দলীয় প্রাক্তন প্রধানের গ্রেফতারি নিয়ে বাসন্তীর আরএসপি-র বিধায়ক সুভাষ নস্কর শুধু বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। আমার কিছু বলার নেই।”
যদিও পুরঞ্জয়বাবুর প্রতিবেশীদের অনেকে এই গ্রেফতারি মানতে নারাজ। তাঁদের মধ্যে বিমল নস্কর বলেন, “বিশ্বাস করি না পুরঞ্জয়বাবু দুর্নীতি করতে পারেন। সাদাসিধে জীবনযাপন করেন। ওঁর মা এখনও নদীতে মাছ ধরেন।” অনিতা মাইতি নামে আর এক প্রতিবেশী বলেন, “সব সময়ে হয়তো ওঁর পক্ষে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে প্রকল্পের কাজ দেখা সম্ভব হত না। কেউ হয়তো সেই সুযোগ নিয়েছে।” |