সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এক ধারে শ’য়ে শ’য়ে ভ্যানরিকশা দাঁড়িয়ে থাকায় ১২ ফুট চওড়া রাস্তাটা সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। তবু যে সাধারণ মানুষ সহজে চলাফেরা করতে পারবেন, তার উপায় নেই। কারণ যানজট। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। এ নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে যাত্রীদের।
যশোহর রোড ছাড়া বনগাঁ শহরের অন্য গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি হল স্টেশন রোড। যেখান দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু যাত্রী তোলার জন্য ওই রাস্তায় যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকা ভ্যানের দাপট এবং যানজটের কারণে এক কিলোমিটারের কিছু বেশি লম্বা রাস্তাটি পেরোতে যাত্রীরা গলদঘর্ম হন। অনেকে নির্দিষ্ট সময়ের ট্রেন ধরতে পারেন না। রাস্তার ধারে ফেলে রাখা ইমারতীর জিনিসের জন্যও মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। বর্ষায় সমস্যা আরও বাড়ে। কারণ, রাস্তার বিভিন্ন অংশে জল জমে যায়। তা ছাড়া, বনগাঁ স্টেশনে মালগাড়ি থেকে পণ্য ওঠানো-নামানোর ব্যবস্থা আছে। ওই পণ্য নেওয়ার জন্য ১০ চাকার ট্রাকও ওই রাস্তায় ঢোকে। তখন যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে হাঁসফাঁস করা ছাড়া উপায় থাকে না। |
যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেন স্টেশনে ঢোকার সময়েই ওই রাস্তায় যানজট ব্যাপক আকার নেয়। যাত্রী তোলার জন্য ভ্যান-চালকদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। যাত্রী নিয়ে উল্টোদিক থেকে স্টেশনমুখী ভ্যানও আসতে থাকে। সংকীর্ণ রাস্তায় ভ্যানের তিনটি লাইনও হয়ে যায়। স্থানীয় দোকানদারদের বক্তব্য, মাঝেমধ্যেই রাস্তাটিতে ভিড় এত বেড়ে যায় যে ক্রেতারা দোকানে ঢুকতে নাজেহাল হন। রাস্তাটিতে এমনিতেই যাত্রীদের চাপও বেশি থাকে। কেননা, বাংলাদেশে যাতায়াতকারী যাত্রীরা এই রাস্তা ব্যবহার করেন। যাত্রীদের অনেকে মনে করছেন, স্টেশন রোডে ভ্যান-শেড তৈরি করা হলে সমস্যার কিছুটা সুরাহা হবে। কেউ কেউ দাবি তুলেছেন ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের। ওই রাস্তায় পুরসভার আলোও বেশ কিছু দিন ধরে জ্বলছে না।
ভ্যানের এই দাপট নিয়ে ভ্যান-চালকদের একটি সংগঠনের সভাপতি দিলীপ দাস বলেন, “এখানে আমাদের তিনটি সংগঠনের ২১০টি ভ্যান চলে। সবই পুরসভা অনুমোদিত। তার বাইরেও অনেক ভ্যান চলে। আমরা ভ্যান-চালকদের যাত্রী তোলার জন্য হুড়োহুড়ি করতে বারণ করি। তবে, পুরসভা একটি ভ্যান-শেড করে দিলে সুবিধা হয়। আমরা পুরসভার কাছে এ ব্যাপারে আবেদন করেছি।”
এ নিয়ে বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আঢ্য বলেন, “ভ্যান-শেডের জন্য আমাদের তহবিলে অর্থ রয়েছে। আমরা শেড তৈরি করে দিতে চাই। কিন্তু জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। খোঁজা হচ্ছে। বেআইনি ভ্যান বা যানবাহনের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের উচিত ব্যবস্থা নেওয়া। যাত্রীদের যাতে ভ্যান-চালকদের খুশি মতো ভাড়া দিতে না হয়, তার জন্য শীঘ্রই নির্দিষ্ট ভাড়া-তালিকা তৈরি করে দেওয়া হবে।” পুরসভা উদ্যোগী হলে সহযোগিতা করা হবে বলে মহকুমা পুলিশের এক কর্তা জানান। আর ওই রাস্তায় পুরসভার লাগানো আলো না জ্বলা নিয়ে পুরপ্রধানের বক্তব্য, “পুরসভার পক্ষ থেকে যে বাতিগুলি লাগানো হয়েছিল, তা দেখভাল ও জ্বালানোর দায়িত্ব বিজ্ঞাপন সংস্থার। ওদের এ ব্যাপারে বলা হয়েছে। বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা না হলে ওদের চুক্তি বাতিল করা হবে।” |