কামদুনি মামলা ফেরাতে আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
লকাতার আদালতে নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা আছে। সেই জন্যই সেখানে কামদুনি মামলার বিচারকাজ চালানোর সিদ্ধান্ত ঠিক বলে মনে করে সুপ্রিম কোর্ট। তাই বারাসত আদালত থেকে ওই মামলা কলকাতায় সরানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যে-আবেদন করা হয়েছিল, শীর্ষ আদালত সোমবার তা খারিজ করে দিয়েছে।
৭ জুন বাড়ি ফেরার পথে বারাসতের কামদুনিতে এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। তার প্রতিবাদে এবং দোষীদের চরম শাস্তি চেয়ে সরব হয় কামদুনি। সেই মামলা বারাসত আদালত থেকে কলকাতায় সরানোর সময়েই কামদুনির বাসিন্দারা আপত্তি তুলেছিলেন। তার পরে তাঁরা সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। ধর্ষিত ও নিহত ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়েছিলেন আইনজীবী বিজন ঘোষ।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এইচ এল দাত্তু এবং বিচারপতি মহম্মদ ইউসুফ ইকবালের বেঞ্চ এ দিন বারাসত আদালতে মামলা ফেরানোর আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেছে, কামদুনি কাণ্ডের বিচার চলবে কলকাতার নগর দায়রা আদালতেই। দেশের যে-কোনও আদালতেই সুবিচার পাওয়া যায়। বিচার ব্যবস্থার উপরে ভরসা রাখতে হবে। আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, এই মামলার ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেনি সুপ্রিম কোর্ট।
ওই ধর্ষণ ও খুনের মামলায় বারাসত আদালতে অভিযুক্তদের হয়ে কোনও আইনজীবী দাঁড়াতে পারেননি। কারণ, রোজই সেখানে বিক্ষোভ চলছিল। অভিযুক্তেরা নিরপত্তার অভাব বোধ করছিল বলেই হাইকোর্ট মামলাটি কলকাতায় সরিয়ে দেয়। এ দিন সুপ্রিম কোর্টে বিষয়টির উল্লেখ করেন অভিযুক্তদের আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ।
বিচারপতি দাত্তু তখনই মন্তব্য করেন, বারাসত আদালতের থেকে কলকাতা নগর দায়রা আদালতে (বিচার ভবনে) অনেক সুষ্ঠু ভাবে মামলাটির বিচার হচ্ছে। সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও অনেক কড়া। মামলাটি বারাসত থেকে বিচার ভবনে পাঠিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার রায় ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি দাত্তু।
সুপ্রিম কোর্ট এ দিন ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় আজ, মঙ্গলবার কলকাতা নগর দায়রা বিচারক (বেঞ্চ-২) সঞ্চিতা সরকারের আদালতে কামদুনি মামলার চার্জ গঠন করতে আর কোনও অসুবিধা রইল না। ওই চার্জ গঠনের পরেই মামলার প্রকৃত বিচার পর্ব শুরু হবে।
শীর্ষ আদালতে ক্ষতিগ্রস্তদের আইনজীবী বিজনবাবু এ দিন বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আমাদের আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে। হাইকোর্টের সিদ্ধান্তই ঠিক ছিল বলে জানিয়েছে।” কামদুনি মামলায় সরকারি আইনজীবী বদল চেয়েও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন নিহত ছাত্রীর দাদা। মামলাটি ফের বারাসত আদালতে ফেরত পাঠানোর মূল আবেদনই খারিজ হয়ে যাওয়ায় সরকারি আইনজীবী বদলের বিষয়টিও আপাতত ধাপাচাপা পড়ে গেল বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।
সুপ্রিম কোর্ট মামলা খারিজ করে দেওয়ায় মুষড়ে পড়েছেন কামদুনির বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ। তাঁদের আশঙ্কা, কলকাতার বিচার ভবনে মামলার তারিখ পড়লে সকলে নিয়মিত সাক্ষ্য দিতে যেতে পারবেন না। ফলে অভিযুক্তেরা বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবে। নিহত ছাত্রীর দাদা বলেন, “বিচার ব্যবস্থার উপরে আস্থা না-রেখে আমাদের উপায় নেই। আশা করব, মামলাটির নিষ্পত্তি যেন দ্রুত হয়।”
আর অভিযুক্তদের আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ জানান, প্রশাসন বারাসত আদালতে অভিযুক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। এমনকী দমদম জেলেও এক অভিযুক্তকে গলায় তার পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। এই সব কারণেই কামদুনি মামলা বারাসত আদালত থেকে সরিয়ে অন্য আদালতে পাঠানোর আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে বহাল রাখায় আশা করি, বিচার ভবনে এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। অভিযুক্তদের আইনজীবীরাও নির্ভয়ে সওয়াল করতে পারবেন।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.