উন্নত চাষ শিখতেও মোদীর রাজ্যে পিছিয়ে পড়া বাংলা
ন্যানোর হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে শিল্প আগেই পাড়ি দিয়েছিল গুজরাতে। এ বার কৃষিকাজ শিখতেও বাংলার চাষিরা এলেন মোদীর রাজ্যে।
ভোট শিয়রে। প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে থাকা নরেন্দ্র মোদী বিলক্ষণ জানেন, শুধু ‘শিল্পবন্ধু’ তকমা সম্বল করে এ দেশে ক্ষমতা দখল করা যায় না। ২০০৪ সালে ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’ স্লোগান গো-হারা হেরেছিল আম-আদমির দরবারে। ২০০৮-এ একশো দিনের কাজকে অস্ত্র করে ফের বাজিমাত কংগ্রেসের। এ বার তাদের হাতিয়ার গরিবগুর্বোদের জন্য খাদ্য সুরক্ষা।
ভাইব্র্যান্ট গুজরাত বিশ্ব
কৃষি সম্মেলনে। ছবি: এপি
মোদীও তাই এখন গ্রামমুখো। অবশ্যই নিজস্ব ঘরানায়। এলাহি আয়োজনে জড়ো করে ফেলেছেন দেশ-বিদেশের কৃষক, আর কৃষির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা শিল্পমালিকদের। এই মহা-আয়োজনের নাম রাখা হয়েছে ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত বিশ্ব কৃষি সম্মেলন।’ সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরাও। গোটা দেশে কৃষির বৃদ্ধি যেখানে ধুঁকছে, গুজরাত কিন্তু এগিয়ে চলেছে। ভোটের মুখে সেই ছবিটাই তুলে ধরতে চান মোদী।
মোদীর রাজ্যে চাষের প্রযুক্তি দেখে অভিভূত পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট থেকে আসা নারায়ণচন্দ্র সিংহ বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্বরূপ হালদার। গত কালই মেহসনায় গিয়ে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন পশ্চিমবঙ্গ ও গুজরাতে চাষের পদ্ধতির ফারাকটা। মালদহের স্নেহাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আমরা চাষের জল আনি খাল কেটে। কিন্তু এখানে ওপর থেকে ছড়ানো হয় জল। ফলে একই জমিতে উৎপাদন হয় অনেক বেশি। আমাদের রাজ্যেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা চলে, কিন্তু তার জন্য যে টাকা খরচ হবে, রাজ্য সরকার দেবে না। গুজরাত সরকার কিন্তু ৭০% অর্থ দেয়।”
বাংলা থেকে জনা ষাটেক চাষিকে গুজরাতের খেতে নিয়ে আসতে যে ‘বায়োসিড’ সংস্থা উদ্যোগী হয়েছে, তার রিজিওনাল ম্যানেজার পঙ্কজ চান্দিল বললেন, “গুজরাতের কৃষিকাজ দেখে বাংলার চাষিদেরও অনেক কিছু শেখার রয়েছে।” যে নীতীশ কুমারের সঙ্গে সম্প্রতি বিজেপির বিচ্ছেদ হয়েছে, সেই বিহার থেকেও এসেছেন কৃষকরা। যদিও বিহারের বিজেপি নেতা সুশীলকুমার মোদীর অভিযোগ, “কৃষকরা যাতে গুজরাতে যেতে না পারেন, তার জন্য সব রকম চেষ্টা করেছেন নীতীশ কুমার!”
এই সম্মেলনে কৃষকদের সঙ্গে কৃষি সংক্রান্ত শিল্পপতিদের মিলিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য যেমন রয়েছে, তেমনই মোদী আজ তাঁর রাজনৈতিক লক্ষ্যটিও লুকোননি। অনেক আগেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, গুজরাতে সর্দার বল্লভভাই পটেলের একটি বিশালাকার মূর্তি বানাবেন। যার উচ্চতা হবে আমেরিকার ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’র দ্বিগুণ। নাম দেওয়া হবে, ‘ঐক্যের মূর্তি’। সেই মূর্তি বানানোর জন্য তিনি দেশের সব জেলার কৃষকদের থেকে লোহা সংগ্রহ করতে চান। সেই লোহা গলিয়েই তৈরি হবে সর্দার পটেলের মূর্তি। লক্ষ্য, ভোটের আগে জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সব কৃষকের কাছে পৌঁছে যাওয়া। আজ গোটা দেশ থেকে আসা চাষিদের কাছে এই প্রস্তাবিত মূর্তি নিয়ে একটি চলচ্চিত্র দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে লোহা চাইলেন মোদী।
এনডিএ-র শরিক দলের নেতা ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিংহ বাদলকেও তিনি এখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এসেছিলেন মধ্যপ্রদেশের কৃষিমন্ত্রীও। তাঁরা সকলেই মোদীর প্রভূত গুণগান করে তাঁকে আর গুজরাতের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ না থেকে দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দিলেন। বাদল যখন তাঁকে মহাত্মা গাঁধী, সর্দার পটেলের সঙ্গে তুলনা করে দেশের ভবিষ্যৎ নেতা বলে সম্বোধন করছেন, তৃপ্ত মোদীর মুখে তখন স্মিত হাসি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.