|
|
|
|
মেরুকরণের ভয়ই ভাবাচ্ছে কংগ্রেসকে
শঙ্খদীপ দাস • নয়াদিল্লি |
দিগন্তে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে মুজফ্ফরনগরে গোষ্ঠী-সংঘর্ষের ঘটনায় অশনিসংকেত দেখছে কেন্দ্র তথা কংগ্রেস।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতার জন্য আজ অখিলেশ সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলতে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দে। তাঁর দাবি, সতর্ক করা সত্ত্বেও পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন অখিলেশ। তবে কেন্দ্র যে তার দায়িত্ব সম্পর্কে সজাগ, সেই বার্তা দিতে আজ অখিলেশকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তার পরেই তাঁর সচিবালয়ের তরফে সংবাদমাধ্যমকে বলা হয়, শান্তি ফেরাতে সমস্ত রকম সহযোগিতার আশ্বাস অখিলেশকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
উত্তরপ্রদেশে গত দেড় বছরের অখিলেশ জমানায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা নতুন নয়। মুজফ্ফরনগর তার সর্বশেষ উদাহরণ। এর সর্বৈব দায় গোড়ায় বিজেপির উপর চাপিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন অখিলেশ। বিজেপির ষড়যন্ত্র চোখে আঙুল
দিয়ে দেখাতে গ্রেফতার করেছিলেন স্থানীয় চার বিজেপি বিধায়ককেও।
বিজেপি আবার পাল্টা দায় চাপিয়েছে অখিলেশের উপর। উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার দাবি জানিয়েছে তারা। একই দাবি তুলেছেন দলিত নেত্রী মায়াবতীও। তাঁর অভিযোগ, “রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে বিজেপি ও সপা হাতে হাত মিলিয়েই অশান্তি ছড়াচ্ছে।”
কংগ্রেসের ভয়, এই জাতীয় অশান্তি ছড়াতে থাকলে লোকসভা ভোটে মেরুকরণ অবধারিত। তাতে সবথেকে ক্ষতি কংগ্রেসেরই। দলের একাধিক শীর্ষ নেতার মতে, কংগ্রেসের এখন দু’দিক থেকেই বিপদ! মুজফ্ফরনগরের ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করতে গেলে জাঠেরা চটে যাবেন। রাজস্থানে আসন্ন বিধানসভা ভোটে তার ফল ভুগতে হবে। আবার জাঠেদের পক্ষ নিলে সংখ্যালঘুরা অসন্তুষ্ট হবেন। তাই কৌশলে স্রেফ আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নেই আজ অখিলেশ সরকারের সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, নেহরুর বহুত্ববাদেই অবিচল রয়েছে তারা। সব গোষ্ঠীর জন্যই কংগ্রেস সমান ভাবে চিন্তিত।
এর বিপরীতে বিজেপি সমস্ত শক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে চাইছে। দলীয় নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর চেষ্টা চলছে মুজফ্ফরনগরে। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশ তথা হিন্দিবলয়ে ফের হিন্দু ভোট সঙ্ঘবদ্ধ হতে পারে তাঁদের অনুকূলে। এমনকী সেই মেরুকরণের ধাক্কায় অজিত সিংহের জাঠ ভোটও গ্রাস করা যাবে বলে তাঁরা আশাবাদী। উত্তরপ্রদেশে বরাবরই জাঠ-মুসলিম রসায়নে জেতে অজিতের দল। রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, মেরুকরণের ধাক্কায় তাঁর দুকূল যেতে পারে। সেই অবস্থায় কংগ্রেসকে ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে বাধ্য হতে পারেন অজিত। মেরুকরণকে ভয় পাচ্ছেন মায়াও। দলিতদের পাশাপাশি ব্রাহ্মণদের ভোট পেয়ে বসপা-র বৃদ্ধি হয়েছিল। তাঁর মূল আশঙ্কা, বিজেপি ও সপা তলায় তলায় ষড়যন্ত্র করেই মেরুকরণের পরিবেশ তৈরিতে ব্যস্ত। সম্প্রতি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অযোধ্যা যাত্রাকে কেন্দ্র করেও একই অভিযোগ উঠেছিল। ভিএইচপি-র সেই যাত্রায় বাধা দিয়েছিল অখিলেশ সরকার। তবে মায়া এবং কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, ছায়া-যুদ্ধ চালিয়ে হিন্দু ও মুসলিম ভোট নিজের নিজের দিকে টানতে চাইছে বিজেপি ও সপা।
কিন্তু জমি হারানোর আশঙ্কা যে সপাকে কুরে খাচ্ছে, সেটাও কিন্তু আজ বোঝা গিয়েছে দুটি ঘটনায়। অশান্তি রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নিতে আজ ছেলেকে নির্দেশ দেন মুলায়ম। অখিলেশ নিজেও সংখ্যালঘুদের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বিজেপিকে গালমন্দ করেছেন। |
|
|
|
|
|