কলকাতার রাস্তা থেকে চুরি যাচ্ছিল একের পর এক সবুজ অটো। তার পরে নম্বর প্লেট বদলে তা চালানো হচ্ছিল নিউ টাউনের পথে। গত ছ’মাসে শহরে অটো চুরির যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দফতরের হাতে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। শেষে রবিবার রাতে নিউ টাউন থেকে ১৩টি অটো উদ্ধারের পাশাপাশি চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দশ জনকে গ্রেফতার করেছেন লালবাজারের গাড়ি চুরি রোধ শাখার অফিসারেরা।
লালবাজার সূত্রের খবর, গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের পাটুলি, যাদবপুর, কসবা, বেলেঘাটা, মানিকতলা এলাকা থেকে সাতটি অটো চুরি যায়। পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশের এলাকা থেকেও ছ’টি অটো চুরি অভিযোগ পাওয়া যায়। পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে, রাতে রাস্তার ধারে গ্যারাজ করা কিংবা দুপুরে খেতে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় রেখে যাওয়া অটোগুলিই চুরি করা হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অটোর ইঞ্জিনের সঙ্গে ইগনিশনের সংযোগকারী একটি বিশেষ তার কেটে দিয়ে সরাসরি অটো চালু করা হত। আবার অনেক সময়ে নকল চাবিও ব্যবহার করা হত অটোগুলি চুরি করতে। |
ঘটনার তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, নিউ টাউন এলাকায় গত কয়েক মাসে এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি নতুন সবুজ অটো রাস্তায় নেমেছে। সেই সমস্ত অটোর উপরে তাঁরা নজরদারি চালাতে শুরু করেন। দেখা যায়, ওই সন্দেহজনক অটোগুলির নম্বরে কলকাতা এবং পাশ্ববর্তী জেলায় বাস, লরি এমনকী অটোও চলছে। আবার কয়েকটি নম্বর ভুয়ো। অটোগুলির উপরে নজর রাখার পাশাপাশি প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড এলাকার বাসিন্দা শেখ রাজাকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। আগেও ওই যুবক অটো চুরির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল। তাকে জেরা করেই আরও চার জনের নাম জানা যায়। তাদের ধরার পরে যারা অটো কিনেছিল, তাদেরও সন্ধান পান গোয়েন্দারা। উদ্ধার করা হয় ১৩টি অটো। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, শেখ রাজার পরিকল্পনা মতোই শেখ রহমত ও শেখ সাবির অটোগুলি চুরি করত। এর পরে প্রকাশ সাউ নামে এক যুবক সেই অটোগুলির নকল কাগজপত্র বানিয়ে নিউ টাউনের বাসিন্দা মোকসদ আলি মোল্লার কাছে বিক্রি করত। সে ফের ওই অটোগুলি বাজারদরের থেকে কম দামে বিক্রি করত। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “ওই পাঁচ জন ছাড়াও যারা ওই সব অটো কিনেছিলেন, সেই পাঁচ জনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।” |