শহরে অটোচালকদের দৌরাত্ম্য নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কখনও কখনও যাত্রীদের কাছ থেকে এমনও অভিযোগ আসে যে, ইউনিয়ন ও পুলিশের প্রশ্রয়ে অটোচালকদের একাংশ যাত্রীদের সঙ্গে রীতিমতো গুন্ডামি করেন। এক অটোচালকের বিরুদ্ধে সোমবার এ রকমই গুন্ডামির অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, খুচরো নিয়ে বচসার জেরে ব্লেড চালিয়ে এক যাত্রীকে জখম করেন ওই অটোচালক। আরও কয়েক জন অটোচালক মিলে সেই যাত্রীকে বেধড়ক মারধর করেন বলেও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ দিন রাতে শেখ ইমরান নামে এক অভিযুক্তকে তপসিয়ার দারাপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে একটি অটো। |
হামলায় জখম ছোটু খান। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র। |
সোমবার দুপুরে পার্ক সার্কাসের চার নম্বর সেতুর কাছে স্লিপ রোডে ঘটনাটি ঘটে। আহত যাত্রীর নাম ছোটু খান। তাঁর বাড়ি তপসিয়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে তপসিয়ার কোহিনুর মার্কেটের কাছ থেকে পার্ক সার্কাসমুখী অটোয় ওঠেন ছোটু খান এবং শঙ্কর হালদার নামে দুই যুবক। তাঁরা এসি মেশিন সারানোর কাজ করেন। পার্ক সার্কাস থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে তাঁদের বারাসত যাওয়ার কথা ছিল। তাঁরা পার্ক সার্কাস চার নম্বর সেতুর স্লিপ রোডে অটো থেকে নামেন। পুলিশের কাছে ছোটু অভিযোগ করেছেন, অটো থেকে নেমে তাঁরা ভাড়া বাবদ দশ টাকার দু’টি নোট দেন। কিন্তু অটোচালক তাঁদের কাছে চার টাকা খুচরো চান। ছোটুরা তা দিতে না পারায় ওই চালক তাঁদের গালিগালাজ করতে থাকেন।
এ দিন ছোটু বলেন, “গালিগালাজ শুনে আমরা প্রতিবাদ করি। তাতে ওই চালক আমাদের মারতে শুরু করেন। আরও কয়েক জন অটোচালকও তাঁর সঙ্গে যোগ দেন।” শঙ্করের অভিযোগ, “এক জন অটোচালক দুই পায়ের ভিতরে ছোটুর মাথা ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। আরও তিন জন তাকে মারতে থাকেন। ছোটুর ঠোঁটের উপরে ও গলায় ব্লেড দিয়ে আঘাত করা হয়।” তাঁদের আরও অভিযোগ, অটোচালকেরা ছোটুকে উড়ালপুল থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকিও দেন। কোনও ভাবে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়ে ছোটুর প্রতিবেশীদের খবর দেন শঙ্কর। তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ছোটুকে নিয়ে প্রথমে তপসিয়া থানায় যান। সেখান থেকে তাঁদের পুলিশের গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় কড়েয়া থানায়।
ছোটুর দাদা ওসমানের অভিযোগ, কড়েয়া থানা প্রথমে শুধু জেনারেল ডায়েরি করে ছেড়ে দেয়। তারা ছোটুর চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেনি। ওসমান বলেন, “আমরাই ছোটুকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। মুখে ও গলায় ব্যান্ডেজ করার পরে ওকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন আমাদের এলাকা থেকেও আরও অনেকে সেখানে চলে আসেন। আমাদের চাপে শেষ পর্যন্ত চার অটোচালকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ।” |