ক্ষীণ আশার আলোও নিভে গেল।
এ রাজ্যের কারখানায় নিযুক্ত কর্মীদের স্বেচ্ছাবসর আগেই দিয়েছিল পূর্বতন নোকিয়া সিমেন্স নেটওয়ার্ক (বর্তমানে নোকিয়া সলিউশন্স নেটওয়ার্ক নামে পরিচিত)। এ বার কারখানার জমিও ছেড়ে দিল তারা। সিমেন্স-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করার পরে গত ১৬ অগস্ট জমির লিজ ছেড়েছে নোকিয়া।
মাইক্রোসফট্-এর হাতে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসা তুলে দেওয়ার পরে নোকিয়াকে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা দিচ্ছে এই টেলিকম পরিকাঠামো নির্মাতা নোকিয়া সলিউশন্স নেটওয়ার্কই। বছরে ১৮০০ কোটি ডলার। কিন্তু সেই ব্যবসার মানচিত্রে ঠাঁই পাওয়ার শেষ সুযোগ হারাল এ রাজ্য।
|
সল্টলেকের যে-কারখানায় টেলিকম যন্ত্রপাতি তৈরি হত, সেই জমির মালিক ছিল সিমেন্স। জমিটি লিজ নিয়েছিল নোকিয়া। বর্তমান লিজের মেয়াদ চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত ছিল। কিন্তু তা শেষ হওয়ার আগেই লিজ ছেড়ে দিল তারা। জমির মালিকানা রইল সিমেন্সের হাতেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, টেলিকম ব্যবসা আরও বাড়াতে মাইক্রোসফটের থেকে পাওয়া ৭০০ কোটিরও বেশি ডলার কাজে লাগাতে পারবে নোকিয়া। কারণ এ বার এই ব্যবসাকেই পাখির চোখ করে এগোবে তারা। ফলে টিঁকে থাকলে চেন্নাই, গুড়গাঁও ও বেঙ্গালুরুর মতো সল্টলেক কারখানাও ওই পরিকল্পনার অঙ্গ হয়ে উঠতে পারত বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
গত বছরের জুলাইয়ে জার্মান বহুজাতিক সিমেন্স-এর ৫০% মালিকানা কেনে নোকিয়া। নোকিয়া সিমেন্স নেটওয়ার্কের নাম হয় নোকিয়া সলিউশন্স নেটওয়ার্ক। গাঁটছড়া খোলার আগেই পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৭ হাজার কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হয়। সেই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে এ রাজ্যেও কর্মীদের স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হয়েছে। পুনর্গঠনের পরে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে লাভের মুখ দেখেছে সংস্থা।
১৯৮৭-তে রাজ্যের কাছ থেকে জমি পায় সিমেন্স। বৈদ্যুতিন, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প গড়তে তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিমেন্স ইন্ডিয়াকে ১১ একর দেয়। রাজ্য সরকারি সংস্থা ওয়েবেল-এর সঙ্গে জোট বেঁধে টেলিপ্রিন্টার, ইপিএবিএক্স-এর মতো যন্ত্র তৈরি করতে শুরু করে সিমেন্স। পরে ওয়েবেল সরে যায়। ২০০৭-এ সিমেন্স-নোকিয়ার যৌথ সংস্থা তৈরির সময়ে ওই ১১ একর সিমেন্সেরই থাকে। রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি ছিল জমিটি উৎপাদন শিল্পে কাজে লাগাতে হবে। পরে ঠিক হয় সেখানে তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো গড়বে সিমেন্স, যা এখনও হয়নি। এখন রাজ্য সিমেন্সকে চাপ দিয়ে তা করাতে পারে কি না, সেটাই দেখার। |