সকাল ১০টার পর ট্রেন ধরতে আসা মানেই ঠায় দু’ঘণ্টা স্টেশনে বসে থাকা। কারণ বর্ধমান থেকে আসানসোল যাওয়ার পরের ট্রেন সেই দুপুর ১২টায়। আবার উল্টো দিকেও তাই। সকাল সাড়ে ৯টার পরে বর্ধমান যেতে হলে সেই ১২টা ৪০। এতে মুশকিলে পড়েছেন গলসি, মানকর, পারাজের বাসিন্দারা।
যাত্রীদের অভিযোগ, সকালে ভিড়ে ট্রেন ধরতে না পারলে সেই দুপুর পর্যন্ত বসে থাকতে হয়। তার উপরে ট্রেন দেরি করলে অনেক সময়েই প্রয়োজনীয় কাজ সারার আর সময় থাকে না। তাঁদের দাবি, বর্ধমান-আসানসোল লাইনে লোকাল ট্রেনের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। দ্রুত ট্রেন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, দুটো লোকাল ট্রেনের মাঝে বেশ কিছু এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন থাকলেও সেগুলি গলসি, মানকর বা পারাজের মতো স্টেশনে দাঁড়ায় না। ফলে মুশকিলে পড়েন ওই স্টেশনের যাত্রীরা। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নন্দিতা চক্রবর্তীর বাড়ি পারাজে। তিনি বলেন, “ক্লাস করে ৫টা ৫২-র লোকাল কোনও দিনই পেতাম না। ফলে বেশিরভাগ দিন রাত ৮টা ৫ মিনিটের শেষ লোকালে বাড়ি ফিরতে হত। বাধ্য হয়ে বর্ধমানে মেস ভাড়া নিয়ে থাকছি।” নন্দিতার আক্ষেপ, “শেষ ট্রেনের আগে যদি একটা লোকাল ট্রেন থাকত তাহলে আমাকে আর মেস ভাড়া করে থাকতে হত না।”
নিত্যযাত্রীদের দাবি, আসানসোল থেকে বর্ধমান যাওয়ার লোকাল ট্রেনও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাঁদের দাবি, রাতে ট্রেন আরও কমে যায়। ফলে ওই রুটে যাতায়াতকারী সমস্ত যাত্রীরাই সমস্যায় পড়েন। আসানসোল থেকে রাত ৭টা ৫ মিনিটের পর লোকাল ছাড়ে ৯টা ৩৫ মিনিটে। দুর্গাপুরে থেকে পড়াশোনা করছেন রানিগঞ্জের টিডিবি কলেজের পড়ুয়া তমালিকা সেন। তাঁর বক্তব্য, “দুর্গাপুর থেকে রানিগঞ্জ যাওয়ার লোকাল ট্রেন সকাল ১১টার পরে আবার সেই দুপুর ১টায়। ফলে ১২টা থেকে কলেজ থাকলে কোনও ভাবে যদি ১১টার ট্রেন না ধরতে পারি তাহলে আর কলেজ যাওয়া হয় না। নাহলে বাসে যেতে হয়।” মানকরের নিত্যযাত্রী সুকুমার পাল জানান, নিত্যযাত্রীদের পক্ষ থেকে তাঁরা কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরীকে এই সমস্যা নিয়ে চিঠিও লিখেছেন। পূর্বরেলের আসানসোল ডিভিশনের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বনাথ মুর্মু জানান, এই মূহুর্তে লোকাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর সেরকম কোনও পরিকল্পনা রেল কর্তৃপক্ষের নেই। তবে তাঁর আশ্বাস, “যদি যাত্রীদের চাহিদা থাকে তবে ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা করব।” |