সিপিএম নেতা খুনে অধরা দুষ্কৃতীরা
নিহত সিপিএম কর্মী দিলীপ সর্দারের খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি কেউ। রবিবার সন্ধ্যায় বসিরহাট মর্গ থেকে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে মুনসিঘেরি থেকে মিছিল করে সিপিএম। মুচিখোলা, বড় বাড়ি হয়ে দেহ পৌঁছয় ট্যাংরামারি গ্রামে। শনিবার রাতেই সিপিএমের তরফে থানায় কুড়ি জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করা হয়। পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, “মেছোভেড়ির দখলদারি কায়েম রাখতে দুষ্কৃতীদের হাতে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। তার সঙ্গে পুলিশের এঁটে ওঠা শক্ত। কাউকে ধরলেই রাজনৈতিক দলগুলি তাকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারও করা যাচ্ছে না।”
শনিবার দুপুরে ধান রোয়ার কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন দিলীপ সর্দার। বেশ কিছু দিন ধরেই হাড়োয়া থানার গাজিতলা মেছোভেড়ি নিয়ে গোপালপুর-২ পঞ্চায়েতে বিবাদ চলছিল সিপিএম ও তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। ওই দিন দুপুরে গুলি-বোমায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ছ’টি চালাঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ৩০ রাউন্ড গুলি চলে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সেই সময়েই ঘরে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মারা যান দিলীপ। ঘটনার পরে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
নিহত দিলীপের শোকার্ত পরিবার। ছবি: নির্মল বসু।
গোপালপুর-২ পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ১২৬৫ বিঘা জমি নিয়ে গাজিতলা মেছোভেড়ি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, আগে তার মালিক ছিলেন পাঁচ জন। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৯৫ জন। সকলেই ওই জমিতে মাছ চাষ করেন। ওই জমির দখলকে কেন্দ্র করে অনেক দিন ধরেই তৃণমূল-সিপিএমের বিবাদ চলছিল। আগে ভেড়ির দখল ছিল সিপিএমের। পরে ২০১০ সালে বিধান সভা নির্বাচনের পরে তা তৃণমূলের দখলে যায়। তৃণমূল এসে ভূমিহীন কৃষকদের ৫০০ বিঘা জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই মতো গত বছর ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিলি বণ্টনের মধ্যে জমির মালিকদের ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। ঠিক হয়, অন্তত ৩০০ বিঘা জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বিলি করতে হবে। কিন্তু মালিক পক্ষ ১০০ বিঘার বেশি জমি দিতে রাজি নন। আর তাকে কেন্দ্র করেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত।
এ দিন গ্রামে মৃতদেহ পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন দিলীপের স্ত্রী বৈশাখী। সংসারে একমাত্র রোজগেরে ছিলেন তিনি। সামান্য জমিতে চাষ করে সংসার চালানো, ছেলেমেয়েদের মানুষ করাসবই ছিল তাঁর একার দায়িত্ব। মেয়ে সুলেখা পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। ছেলে শুভজিত তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।”
শনিবারের ওই ঘটনার পর থেকেই র্যাফের টহলদারি চলছে গ্রামে। সিপিএমের মিনাখাঁ ২ নম্বর লোকাল কমিটির সম্পাদক আলি হোসেন মোল্লা বলেন, “মেছোভেড়ি নিজের দখলে রাখতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা প্রায়ই গ্রামে ঢুকে হামলা চালাচ্ছে। প্রশাসন বা পুলিশকে জানিয়ে কোনও লাভ হচ্ছে না।”
বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুরুল ইসলামের বক্তব্য, “এলাকায় শান্তি ফেরাতে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা জরুরি। পুলিশকে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে।’’

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.