রাজনৈতিক অশান্তির জেরে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া এবং বনগাঁয় খুন হলেন দু’জন। এক জন সিপিএম, অন্য জন তৃণমূল কর্মী।
পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই হাড়োয়ার বিভিন্ন এলাকায় মেছোভেড়ির দখল নিয়ে সিপিএম ও তৃণমূূল কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষ চলছে। শনিবার দুপুরে ফের দু’পক্ষের গুলি-বোমার লড়াইয়ে তেতে ওঠে গোপালপুর-২ পঞ্চায়েত এলাকা। একটি খালের বাঁধ কেটে দেওয়ার চেষ্টা হয়। গোট ছয়েক আলাঘর (যেখান থেকে ভেড়ি পাহারা দেওয়া হয়) জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। গোলমালের সময়ে ট্যাংরামারির বাসিন্দা, সিপিএম কর্মী দিলীপ সর্দার (৩৫) ধান রোয়ার কাজ সেরে ফিরছিলেন। তেঁতুলিয়া আবাদ এলাকার রাস্তায় তাঁকে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করে বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে। গুলিতে জখম হন দুই তৃণমূল কর্মী। এলাকায় র্যাফ নামে। পুলিশ জানায়, এ দিন দু’পক্ষ প্রায় ৩০ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে।
সিপিএমের মিনাখাঁ-২ লোকাল কমিটির সম্পাদক আলি হোসেন মোল্লার অভিযোগ, “তৃণমূল এখানে সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। ওদের গুলিতেই মারা যান আমাদের ওই দলীয় কর্মী।” অভিযোগ উড়িয়ে বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুরুল ইসলাম দাবি করেন, “সিপিএমের ছোড়া গুলির মধ্যে পড়েই মারা যান ওই যুবক।
ওরা আমাদের আলাঘর জ্বালিয়েছে। ওদের গুলিতে আমাদের দু’জন আহত হন।”
অন্য দিকে, শুক্রবার রাতে বনগাঁর জয়ন্তীপুরে বাড়িতে ঢোকার মুখে আততায়ীদের গুলিতে খুন হন নাসির আলি মণ্ডল (২৬) নামে এক তৃণমূল কর্মী। তিনি একটি চায়ের দোকান চালাতেন। নিহতের পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনার পিছনে সিপিএমকেই দায়ী করেছে। সিপিএম অভিযোগ মানেনি।
পুলিশ জানায়, নিহতের বাবা আক্কাস আলি মণ্ডলের দায়ের করা খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই রাতেই চার জনকে ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
নিহতের বাবা বলেন, “শুক্রবার রাতে ছেলেকে দরজা খুলতে গিয়ে দেখি, বাড়ির সামনে মুখ্যমন্ত্রীর একটি কাট-আউটের পিছন থেকে বেরিয়ে কতগুলো লোক গুলি চালাল। ছেলের বুকে গুলি লাগে। রাজনৈতিক কারণেই ছেলেকে খুন করা হল।” বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “নাসিরের স্ত্রী তৃণমূলের হয়ে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়েছিল। তার পর থেকেই সিপিএম হুমকি দিচ্ছিল। শুক্রবার খুন করল।” অভিযোগ উড়িয়ে বনগাঁর সিপিএম নেতা গোবিন্দ মণ্ডল দাবি করেন, “তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই যুবক খুন হন।” |