পণ্ড ম্যাচ নিয়ে দোষারোপ শুরু, কাঠগড়ায় আইএফএ
ত্রিফলার খোঁচায় শুরুতেই বেসামাল লিগ
শঙ্কা উপেক্ষা করে ম্যাচ আয়োজন করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করলে যা হয়! কম আলোর জেরে পঁচাত্তর মিনিটেই ভেস্তে গেল কলকাতা লিগের (মূলপর্ব) উদ্বোধনী ম্যাচ। কিন্তু রবিবার বিকেলে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার পরেও ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে যে-উত্তরের খোঁজে প্রায় ঘণ্টাখানেক উত্তপ্ত তর্ক-বিতর্ক চলল তা হল, এই ছত্রভঙ্গের জন্য দায়ী কে?
আয়োজক হিসেবে পুরো দোষটাই অনায়াসে রাজ্য ফুটবল সংস্থার উপর চাপিয়ে দেওয়া যায়। আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় নিজেও স্বীকার করলেন, “বিকেল চারটেয় খেলা শুরু হলে ম্যাচ শেষ করা যে সম্ভব নয়, সেটা আমি জানতাম। তবু একটা ঝুঁকি নিয়েছিলাম। রবিবার সূর্যাস্তের সময় ছিল বিকেল ৫-৫৬। ঠিক ভাবে হলে, ম্যাচ শেষ হয়ে যায় ৫-৫৫-র মধ্যেই। কিন্তু বৃষ্টি আর নিম্নচাপের জন্য আলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেল।” এত বড় ঝুঁকি নেওয়ার আদৌ কোনও প্রয়োজন ছিল কি? না কি অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে আইএফএ সচিবের সিদ্ধান্তে? উত্তর হল ইস্টবেঙ্গল।
আলো-বিভ্রাটের আশঙ্কা থাকলেও, লাল-হলুদ কর্তাদের চাপেই শেষ পর্যন্ত মাথা নত করতে হয়েছে আইএফএ-কে। ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “আমরা আগেই বলেছিলাম ম্যাচ চারটে থেকে শুরু হলে শেষ করা যাবে না। ম্যাচের সময় অন্তত আধ ঘণ্টা এগোনো উচিত। কিন্তু স্পনসরদের চাপে সেটা করা যায়নি। আমরাও ফুটবলের স্বার্থে তা মেনে নিয়েছি।” কিন্তু ইস্টবেঙ্গল মাঠে যে ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা নেই। তা হলে যুবভারতী নয় কেন? “আমাদের মাঠে যখন ম্যাচ করা সম্ভব, তখন অন্য মাঠে খেলব কেন? ক্লাবের মাঠে যাতে আমাদের সমর্থকেরা ম্যাচ দেখতে পারে, সেই ব্যবস্থা তো করা হয়েছে। স্পনসরদের ভাবা উচিত কোন সময় ম্যাচ দেখাবে। আমরা আমাদের মাঠেই খেলব।”

১৫ মিনিট আগেই বন্ধ ম্যাচ। মাঠে নেমে পড়লেন পিতা-পুত্র। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
কলকাতা লিগের ক্রীড়াসূচি অনুযায়ী, লিগের বাকি সব ম্যাচ যুবভারতীতেই হওয়ার কথা। উদ্বোধনী ম্যাচের ক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গল থেকে কোনও বাড়তি চাপ ছিল কি না, তা স্বীকার না করলেও আইএফএ সচিব বললেন, “পরের ম্যাচগুলোয় কোনও সমস্যা হবে না। প্রথম ম্যাচটাই শুধু ইস্টবেঙ্গল মাঠে করা হয়েছিল।” কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রতবাবু সাফ জানিয়ে দিলেন, “১৭ সেপ্টেম্বর আমাদের এএফসি কাপের ম্যাচ আছে। তাই পরের ম্যাচটা শুধু যুবভারতীতে খেলতে রাজি হয়েছি। প্রস্তুতির জন্য। তা বলে সব ম্যাচ ওখানে খেলার কোনও প্রশ্নই নেই। আমরা আমাদের মাঠে খেলব।” উৎপলবাবু অবশ্য বিষয়টা আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর চেষ্টায়। তবে এই মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গল-কালীঘাট মিলন সঙ্ঘ ম্যাচের ‘রিপ্লে’র তারিখ খুঁজতেই হিমশিম খাচ্ছে আইএফএ।
রবিবার আলো-বিতর্কের মধ্যে আবার রেফারির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ময়দানে। কালীঘাটের গোলকিপার শুভম সেন বারবার রেফারি প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায়কে আলো কমের আবেদন জানালেও, ম্যাচ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিতে থাকেন তিনি। কথা না শোনার ‘অপরাধে’ শুভমকে হলুদ কার্ড দেখাতেও ছাড়েননি প্রাঞ্জলবাবু। অথচ সে সময় আশেপাশের স্ট্রিটলাইট, এমনকী ইস্টবেঙ্গলে ফুটবলারদের টানেলেও আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের কর্তা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, “আমি আগে থেকেই জানতাম, ওই সময় ম্যাচ শুরু হলে কিছুতেই শেষ হবে না। স্পনসরদের চাপে আমাদের খেলতে হল। দলের গোলকিপারকে অকারণে কার্ড দেখতে হল। ম্যাচের রেফারিং নিয়ে আমরা আইএফএ আর সিআরএ-র কাছে অভিযোগ করছি। সত্যি, ছোট দল বলে অনেক কিছুই মুখ বুজে সহ্য করতে হয় আমাদের।”
ইস্টবেঙ্গলের চাপ, স্পনসরদের জেদ ও আইএফএ সচিবের অহেতুক ঝুঁকি ত্রিফলার খোঁচায় শুরুতেই হোঁচট খেল কলকাতা লিগ।

ম্যাচ বাতিল হলেও খুশি কোচ
আলো-বিভ্রাটের জেরে নতুন মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ ভেস্তে গেলেও, সৌমিক-অ্যালভিটোদের পারফরম্যান্সে খুশি মার্কোস ফালোপা। আর হবে না-ই বা কেন? রবিবার এক ঘণ্টায় চারটে গোল করল ইস্টবেঙ্গল। একটা আত্মঘাতী কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের স্টপার মোহন সরকারের, বাকি তিনটে অ্যালভিটো, জোয়াকিম ও ভাসুমের। তবে ম্যাচে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়লেন অ্যালভিটো। বয়সের ভার যে তাঁর স্কিলের ওপর কোনও প্রভাব ফেলেনি, সেটা ফের প্রমাণ করলেন তিনি। এ দিন পেনাল্টি থেকে একটি গোল করলেন, একটি করালেন জোয়াকিমকে দিয়ে। ফালোপা বললেন, “ম্যাচটা আধ ঘণ্টা আগে হলে তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরতাম। কালীঘাট টিমের বারবার ম্যাচ বন্ধ করার আবেদনে আরও সময় নষ্ট হল।” ম্যাচ পণ্ড হওয়ার আগে কালীঘাটের হয়ে একটি গোল করেন অরিজিৎ বাগুই।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.