ডিজিটাল কেবল পরিষেবা
নয়া ব্যবস্থায় মিলছে না পছন্দের চ্যানেল, অভিযোগ গ্রাহকদের
শুধু প্যাকেজ নয়, নিজের ইচ্ছে মতো চ্যানেলও বেছে নিতে পারেন কলকাতার ডিজিটাল কেবল টিভি পরিষেবার গ্রাহকেরা। কখনও কখনও তা সস্তাও হতে পারে। কিন্তু শহরের অধিকাংশ জায়গাতেই মাল্টি-সার্ভিস অপারেটর (এমএসও) এবং কেবল অপারেটরেরা গ্রাহকদের শুধুমাত্র প্যাকেজ নিতেই বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠছে। যদিও টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ট্রাই)-র স্পষ্ট নির্দেশ, প্যাকেজের পাশাপাশি গ্রাহকদের নিজেদের পছন্দের চ্যানেল বেছে নেওয়ারও সুযোগ দিতেই হবে।
অ্যানালগ পদ্ধতিতে এমএসও-রাই ঠিক করতেন কোন চ্যানেল সম্প্রচার করা হবে। গ্রাহকেরা অপছন্দের চ্যানেল বাদ দিতে পারতেন না। উল্টে তার মাসুল গুনতে হত। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তিতে গ্রাহকেরা অপছন্দের চ্যানেল বাদ দেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া ‘ফ্রি-টু-এয়ার’ ছাড়া গ্রাহকেরা অন্য চ্যানেল বেছে নিতে পারেন দু’ভাবে। বিভিন্ন চ্যানেল নিয়ে একাধিক প্যাকেজ ও তার মাসুল ঠিক করে গ্রাহকদের জানাবেন এমএসও-রা। অথবা এমএসও-দের স্থির করা এক একটি পে-চ্যানেলের মাসুল তালিকা থেকে পছন্দের চ্যানেল বেছে নেবেন গ্রাহকেরা।
প্যাকেজ হিসেবে না নিজের পছন্দ অনুযায়ী গ্রাহক চ্যানেল নিচ্ছেন, সেগুলির দর কী, সে সব তথ্য সংশ্লিষ্ট আবেদনপত্রে গ্রাহকের জানানোর কথা। কিন্তু বহু গ্রাহকের অভিযোগ, পছন্দ মতো চ্যানেল বেছে নিতে চাইলে বলা হচ্ছে আপাতত সেই সুযোগ মিলবে না। ফলে প্যাকেজ-এর হিসেবে যেমন অপছন্দের চ্যানেল দেখতে হচ্ছে, তেমন সেগুলির মাসুলও গুনতে হচ্ছে। কিংবা বেশি মাসুলের প্যাকেজ নিলেই একাধিক খেলার চ্যানেল দেখা যাচ্ছে। কম মাসুলের প্যাকেজে একটি বা দু’টি খেলার চ্যানেল রাখা হয়েছে, যেগুলি আদৌ জনপ্রিয় নয়। গ্রাহকদের প্রশ্ন, ডিজিটাল পরিষেবায় তা হলে লাভ কী হল?
শহরের অন্যতম কেবল অপারেটর মৃণাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এমএসও-দের তরফে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর অভাবেই এই সমস্যা হচ্ছে। প্রশাসনিক স্তরেও নজরদারির অভাব রয়েছে।
যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ এমএসও-রা। সিটি কেবল-এর কর্তা অনুরাগ চিরিমার ও মন্থনের কর্তা সুদীপ ঘোষের দাবি, তাঁরা প্যাকেজের পাশাপাশি গ্রাহকদের পছন্দের চ্যানেলের দর জানানোর জন্য কেবল-অপারেটরদের বলেছেন। সংস্থার ওয়েবসাইটেও দু’ধরনের দরই দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বলেন, “অনেক গ্রাহকই নিজেদের পছন্দের চ্যানেল বেছে আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছেন। তবে মানুষের চাহিদা ও খরচের কথা ভেবেই আমরা প্যাকেজগুলি তৈরি করেছি। তাতে তিনি যেমন পছন্দের চ্যানেল দেখতে পাবেন, খরচও কম হবে।” তবে, গ্রাহকদের পছন্দের চ্যানেলগুলির তথ্য অমিলের অভিযোগ পেলে তাঁরা তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
গ্রাহকদের আরও অভিযোগ, প্যাকেজ ঠিক করার পরে তিন মাস তা বদলানো যাবে না বলে জানিয়েছেন কেবল অপারেটরেরা। ট্রাই-এর এক কর্তা বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী, পছন্দ করা চ্যানেল ৩ মাসের আগে বদলানো যাবে না।” তা হলে কলকাতায় এ সব অনিয়ম নিয়ে তাঁরা কি ব্যবস্থা নেবেন? তাঁর আশ্বাস, নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই কর্তা আরও বলেন, “এত দিন কলকাতার গ্রাহকদের আবেদনপত্রই জমা পড়েনি। তাই আমরা প্রথমে সেই কাজটি সম্পূর্ণ করতে চাইছি। তা হয়ে গেলেই অন্যান্য বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে। তবে এর মধ্যে অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”
করের নামেও গ্রাহকদের থেকে অতিরিক্ত টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠছে। ট্রাই এবং এমএসও-দের দেওয়া হিসেবে, গ্রাহকেরা চ্যানেলের মোট খরচের উপরে ১২.৩৬ শতাংশ হারে পরিষেবা কর দেবেন। আরও ১০ টাকা দিতে হবে বিনোদন কর হিসেবে।
কলকাতায় ৩২ লক্ষ গ্রাহকের মধ্যে ২০ লক্ষেরও বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে এমএসও-দের কাছে। ট্রাই-এর ওই কর্তা জানান, আবেদনপত্র জমা না দেওয়ায় অনেকেরই কেবল টিভি সংযোগ পুরোপুরি বা আংশিক বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তাঁরা শুধু ‘ফ্রি টু এয়ার’ চ্যানেল দেখতে পাচ্ছেন। তবে আবেদনপত্র জমা দিলেই সংযোগ চালু হয়ে যাচ্ছে।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.