নলহাটি পাথর শিল্পাঞ্চল
অচলাবস্থা কাটাতে ব্যবস্থা প্রশাসনের
বশেষে নলহাটি পাথর শিল্পাঞ্চলে অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যোগী হল পুলিশ প্রশাসন। রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নলহাটি ও রামপুরহাট থানার পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী নলহাটির কোঠাতলা মোড়ে দাঁড়িয়ে থেকে পাথর বোঝাই করতে আসা গাড়িগুলিকে শিল্পাঞ্চলে অবাধে ঢুকতে সাহায্য করে। জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “অন্যায় ভাবে টাকা তোলার অভিযোগে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” আইএনটিইউসি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আনারুল হোসেনও রয়েছেন। এ দিনই সাঁইথিয়া শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, নলহাটিতে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা কিছু লোক গোলমাল পাকাচ্ছে।
চার মাসেরও বেশি সময় ধরে এই শিল্পাঞ্চলে অচলাবস্থা চলছে। এত দিন পরে সেই অচলাবস্থা কাটাতে প্রশাসন উদ্যোগী হল কেন? অভিযোগ ছিল, শিল্পাঞ্চলে কাজে না গিয়ে শ্রমিক সংগঠনের লোকজন কোঠাতলা মোড়ে অন্যায় ভাবে গাড়ি চালকদের কাছ থেকে ৩০০-৬০০ টাকা আদায় করত। ফলে দিন দিন শিল্পাঞ্চলে পাথর বোঝাই করতে আসা গাড়ির সংখ্যা কমতে থাকে। এই নিয়ে শ্রমিক-মালিক বিরোধ শুরু হয়। নলহাটি ১ ব্লকের বিডিও তাপস বিশ্বাস বলেন, “সমস্যা মেটাতে একাধিক বার পুলিশ-প্রশাসন তরফে শ্রমিক ও মালিক পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। তবে এই ঝামেলার জেরে পঁচিশ হাজারের বেশি মানুষ আর্থিক সঙ্কটে যেমন ভুগতে থাকেন, তেমনি নলহাটি শহরে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সরকারের ঘরে রাজস্ব কমতে থাকে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হতে হয়েছি।” তাঁর দাবি, “কোঠাতলা মোড়ে অন্যায় ভাবে তোলা আদায় এই জটিলতার জন্য অনেকাংশে দায়ী।” এ দিন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহও সিউড়িতে একটি অনুষ্ঠানে এসে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “নলহাটিতে কিছু লোক অন্যায় ভাবে টাকা তুলছিল। পাথর শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ওই সমস্ত লোকদের সরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।”
এ দিকে, পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নলহাটির বিধায়ক, ফরওয়ার্ড ব্লকের দীপক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “পুলিশ লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদের সরিয়ে দিয়েছে এবং অন্যায় ভাবে তাদেরকে থানায় তুলে নিয়ে গিয়েছে। মালিক পক্ষের মদতে পুলিশ-প্রশাসন শ্রমিকদের দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে এ দিন এই কাণ্ড করেছে।” আইএনটিইউসি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আনারুল হোসেন বলেন, “মালিকপক্ষ আমাদের দাবি মতো এখনও পর্যন্ত ১২০টি চালু ক্রাশার দেয়নি। ফলে ৭২০ জন পাথর বোঝাই শ্রমিক এখনও সমস্ত ক্রাসারে কাজ পাচ্ছেন না।” টিইউসিসির সম্পাদক আকবর শেখ বলেন, “৪০০টি ক্রাসারের মধ্যে মালিক পক্ষ যে ১০৫টি ক্রাসার দিচ্ছে, তা কোনওটি রুগ্ন, কোনওটির বর্তমানে অস্তিত্ব নেই। মালিক সমিতির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আমরা ১২০টি চালু ক্রাসার চাই এবং যন্ত্র চালিত ক্রাসারে আমাদের দু’জন করে শ্রমিককে মাল বোঝাই করতে দেওয়া হোক। তাতে সব শ্রমিকই কাজ পাবেন।” তাঁরা কোনও রকম অন্যায় ভাবে টাকা তোলেননি বলে দাবি দু’টি শ্রমিক সংগঠনের। যদিও পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির একটি সংগঠনের সভাপতি আনন্দ যাদব বলেন, “গত ৬ অগস্ট রামপুরহাট মহকুমাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল তা না মেনে অন্যায় ভাবে টাকা তুলছিল শ্রমিক পক্ষ। পাথর শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হওয়ার জন্য প্রশাসনকে ধন্যবাদ। তবে যে সমস্ত শ্রমিক কাজ পাবেন না, শ্রমআইন অনুযায়ী তাঁদের ন্যূনতম মজুরি দেওয়া হবে এবং যাঁরা কাজ করতে অনিচ্ছুক তাঁদেরকে এককালীন টাকা দেওয়া হবে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.